শ্রেষ্ঠতম পেশা শিক্ষকতায় থাকায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি: ঝলক কান্তি চক্রবর্তী

সোমবার, আগস্ট ২৮, ২০২৩

জাতির সংবাদ ডটকম :  শ্রেষ্ঠতম পেশা শিক্ষকতায় থাকায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।ছাত্র-ছাত্রীদের অমলিন ভালবাসা পাবার সুযোগ ছিল বলে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

 

সংবাদকর্মীদের সাথে আলাপকালে ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ঝলক কান্তি চক্রবর্তী এসব কথা বলেন।

 

ঝলক কান্তি চক্রবর্তী বলেন, আমি এমন এক এলাকায় কর্মজীবন অতিবাহিত করেছি যেখানে আমার চেয়ে স্বাধীনকর্মী আর কেউ নেই। “শিক্ষক, অভিভাবক, কমিটি, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে এলাকাবাসী সবাই সারাজীবন স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন যা আমার জীবনের অনন্য পাওয়া।

 

তিনি আরো বলেন, কাজ করতে গেলে ভুল হয়তো হয়ে থাকতে পারে কিন্তু সবাই আমাকে আরও উৎসাহিত করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। শ্রীমঙ্গলের শিক্ষক সমাজও আমাকে হাত ভরে দিয়েছে। যতদিন বেঁচে থাকব এদের সকলের সেবা করেই বেঁচে থাকতে চাই। শ্রেষ্ঠতম পেশা শিক্ষকতায় থাকায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এখানে নিয়মের বিচ্যুতি ঘটানোর সুযোগ কম থাকায় সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। ছাত্র-ছাত্রীদের অমলিন ভালবাসা পাবার সুযোগ ছিল বলে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

 

 

ঝলক কান্তি চক্রবর্তী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের বৌলাশির গ্রামের মৃত- তুষার কান্তি চক্রবর্তী, যিনি শ্রীমঙ্গল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে গেছেন ও মৃত- মনিকা দেবী, যিনি দেবের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে গেছেন।

তাদের ৪ সন্তান দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় ছেলে ঝলক কান্তি চক্রবর্তী । তিনি -২৫ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেন শ্রীমঙ্গলে।

তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন শ্রীমঙ্গলে-চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে- এস এস সি ১৯৮৩ ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, এইচ এস সি ১৯৮৫ শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, বি এস সি, অনার্স গণিত ১৯৮৮ এম সি কলেজ ,এম এস সি, গণিত ১৯৮৯ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি  ১৯৯১ সালের  ২ নভেম্বর ভূনবীর দশরথ হাই স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

পরে ১৯৯৮ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত BRAC  Pace পোগ্রামে গণিত ট্রেইনার হিসেবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন BRAC সেন্টারে ৫০ এর অধিক ট্রেনিং পরিচালনা করেন।

এরপর তিনি সহধর্মিণীর তুলিকা চৌধুরী কে বিবাহ্ করেন ১৯৯৮ সালে। তাদের একমাত্র ছেলে তন্ময় চক্রবর্তী। ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সরকারি ট্রেনিং প্রজেক্ট SEQAEP (সেকায়েপ) এ গণিত প্রশিক্ষক হিসেবে কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, কোম্পানিগঞ্জ, দোয়ারা বাজারসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সেকায়েপ অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয়ে কর্ম সম্পাদন করেন।

অন্তবর্তী সময়ে TQI প্রজেক্টেও প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন গণিত প্রশিক্ষণেও কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে।

২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর সহকারী শিক্ষক থেকে পদোন্নতি পেয়ে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৫ সালে তার ও কমিটির প্রচেষ্টায় ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল টি প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে যাহা গ্রামীণ এলাকার প্রথম ও উপজেলার তৃতীয় পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করে। তাঁর সময়ে ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রথম কলেজে পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতি লাভ করে। ২০১৬ সালে দেশে প্রথম জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন শুরু হয় ঐ সালে তিনিই উপজেলার প্রথম “শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান” হিসেবে নির্বাচিত হন।

এর আগে ২০১৫ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বেসরকারি  শিক্ষকদের কল্যাণে “প্রগ্রেসিভ টিচার্স ফান্ড” বা “পিটিএফ” নামে একটি সঞ্চয়ী সমিতি গঠন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার অধীনে ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি প্রাথমিক শাখা সংযুক্ত হয় ফলে নার্সারি থেকে শুরু করে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬টি, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫টি, কলেজ পর্যায়ে ২টি সহ সর্বমোট ১৩ টি শ্রেণিতে প্রতিদিন ২২ টি শাখায় পাঠদান পরিচালনার দায়িত্ব তিনি পালন করে যাচ্ছেন।

২০১৮ সালে ও ২০২৩ সালে পরপর দু দুবার বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বিপুল ভোটে শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির “সভাপতি” নির্বাচিত হন।

তাহার এই শ্রেষ্ঠত্বের কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে অসংখ্য সন্মানা পদক অর্জন করেন। তাহার কর্মস্পৃহা, সততা ও দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে  প্রাচীনতম বিদ্যালয়টি একটি আর্দশ বিদ্যালয় হিসাবে রুপদেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এর আগে ২০০০ সালে সংগীত ও চারুকলা প্রতিষ্ঠান “নন্দন কানন একাডেমি” প্রতিষ্ঠা করেন,যেটি শ্রীমঙ্গলের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রয়াত দিলীপ কুমার চৌধুরী কোচিং সেন্টার হিসেবে শুরু করেছিলেন। বর্তমানে একাডেমিতে ছবিআঁকা,গান,কবিতা আবৃত্তি সহ তবলা শেখানো হয়।

এছাড়াও এখানে তার ছোট ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদেরও বিশেষ ব্যাচে পড়ানো হচ্ছে।