
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনেটর গ্যারি পিটারসের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সেনেটর পিটারসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়টি তুলে ধরেন বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, বাংলাদেশে হিন্দুসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চলছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগজনক।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এই দাবিকে ‘ভিত্তিহীন অপপ্রচার’ উল্লেখ করে সেনেটর পিটারসের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তা যে কোনো ধর্ম, গোষ্ঠী বা পরিচয়ের হোক না কেন।”
তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে সংখ্যালঘুদের ওপর কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে এগুলো ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।”
সেনেটর গ্যারি পিটারস বলেন, মিশিগান ও ডেট্রয়েটে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সম্প্রতি সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি স্বীকার করেন, বাংলাদেশ নিয়ে কিছু ভুল তথ্যও ছড়িয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আমাদের আপনাদের সহায়তা দরকার। অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশ সফরের জন্য উৎসাহিত করুন, যাতে তারা এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতির বাস্তব অবস্থা স্বচক্ষে দেখতে পারেন। এভাবেই আমরা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়তে পারব।”
বৈঠকে সেনেটর পিটারস বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জানতে চান।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো সীমিত সংস্কারে সম্মত হয়, তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর বড় সংস্কার প্যাকেজ গ্রহণ করলে তা কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে, যেমন আমরা অতীতে দেখেছি।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, **রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারে একমত হলে তারা ‘জুলাই চার্টার’ নামের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ পথচলা নির্ধারণ করবে।
সামাজিক ব্যবসা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে একমত
বৈঠকে দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়তে সামাজিক ব্যবসা ও মাইক্রোক্রেডিটের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়। সেনেটর পিটারস একমত হন, এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দারিদ্র্য হ্রাসে কার্যকর হতে পারে।