সংবাদমাধ্যমে নতুন করে ভীতি ছড়াতেই দুই সম্পাদককে সাজা

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২৪, ২০২৩

 

জাতির সংবাদ ডটকম : আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলে মিডিয়া তোষণ করে আর সরকারে গেলে গলা টিপে ধরে, এটা তাদের পুরোনো চরিত্র। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে নতুন করে ভয় দেখানোর জন্যে বানোয়াট মামলায় দুই সম্পাদককে সাজা দেয়া হয়েছে।

 

বরেণ্য সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায়ের প্রতিবাদ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতারা এসব মন্তব্য করেন।

 

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচিতে নেতারা বলেন, আবারো বিরোধী দলে গেলে মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পদলেহন করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শাসন আর গণমাধ্যম একসাথে চলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।

 

বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন গ্রীন ওয়াচ পত্রিকার সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ ও ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সহ সভাপতি বাছির জামাল, বিএফইউজের প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, সাবেক সহকারী মহাসচিব কাজিম রেজা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান, ডিইউজের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, সাবেক দফতর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, প্রবীণ সাংবাদিক কবি এনায়েত রসুল, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য জিয়াউর রহমান মধু, ডিইউজের সবেক নেতা এস এম আলমগীর, আবদুল হালিম, জেসমিন জুই, সদস্য বোরহান উদ্দিন ফয়সাল, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল মান্নান, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাদ আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হিরা, সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক একেএম মাহফুজুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল প্রমুখ।

 

এছাড়া ডিইউজের, মর্তুজা সাঈদ টিসু, গোলাম কিবরিয়া, আক্তারুজ্জামান রকি, মিয়া আবদুল হান্নান, তাজুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, তালুকদার বেলাল,নাদিম মাহমুদ, রাসেল আহমেদসহ ঢাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের সাংবাদিক নেতারা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

 

সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, দু’জন বরেণ্য সম্পাদককে সাজার নামে তামাশা করা হয়েছে, সাজা দেয়ার জন্য ন্যুনতম গ্রাউন্ডও তৈরি করতে পারে নি সরকার। শুনানি কখন হয়েছে কেউ জানেনা। তিনি বলেন, যে বিচারক মামলার বাদিকে আদালতে অভ্যর্থনা জানান, পেছন পেছন গিয়ে বিদায় জানান, তার কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করাই দুরাশা। উচ্চ আদালতের বিচারকরা নিজেদের শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ দাবি করার সমালোচনা করেন তিনি।

 

এম আবদুল্লাহ বলেন, এসব ফরমায়েশি রায় দিয়ে সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সত্য বলা এবং লেখা থেকে বিরত রাখা যাবে না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের আটটি ধারা বাতিল এবং চারটি ধারা সংশোধনের দাবি জানান তিনি।

 

মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, কোন দেশ কতটুকু সভ্য তা নির্ভর করে সে দেশের গণমাধ্যমের চরিত্রের ওপর। মাহমুদূর রহমান এবং শফিক রেহমানকে সত্য সাংবাদিকতার পথিকৃৎ বলে আখ্যা দেন তিনি।

বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমীন রোকন বলেন, এই সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে লাভ নেই, বরং ভোট ও লেখার অধিকার ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বিদায় করতে হবে।

বাকের হোসাইন বলেন, এই সরকারকে স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিস্ট বললেও কম বলা হয়। তারা মজা পায়। তাই এদের বিদায় করতে হবে, আওয়ামী লীগকে জাতির জন্য অভিশাপ বলে আখ্যা দেন তিনি।

সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, মাহমুদুর রহমান জাসাস অফিস কোথায় তা-ই জানেন না। অথচ জাসাস অফিসে মিটিংয়ের অভিযোগে তাঁকে সাজা দেয়া হয়েছে। যে সময়ের ঘটনা বলা হচ্ছে তখন তিনি জেলে ছিলেন।

ইলিয়াস খান বলেন, আগে মানুষের ঘরে চুরি/ডাকাতি হতো, এখন ব্যাংকে ডাকাতি হয়। মাহমুদুর রহমানকে দীর্ঘ সময় কারাভোগ করা সম্পাদক বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।