সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে দলীয় বক্তব্য নিয়ে এনডিএম এর মিডিয়া ব্রিফিং

মঙ্গলবার, আগস্ট ২৯, ২০২৩

 

 

 

জাতির সংবাদ ডটকম ডেস্ক।।

সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মন্ত্রিসভায় সাইবার সিকিউরিটি এক্ট অনুমোদন, বিরোধীদলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের চরিত্র হনন এবং সরকার দলীয় নেতাদের মনগড়া বক্তব্যের জবাব নিয়ে আয়োজিত আজ  মিডিয়া ব্রিফিং করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম।

 

লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিগত কিছুদিন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সিঙ্গাপুর সফর নিয়ে সরকারি দলের পক্ষ থেকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এইবিষয়ে ইতোমধ্যে আপনারা দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জনাব রুহুল কবির রিজভীর ব্যাখ্যা শুনেছেন। বিএনপির মহাসচিব, বর্ষীয়ান নেতা মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী সাইবার সেল নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছে। বিএনপির সাথে ১ দফা দাবি আদায়ের যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্যতম শরিক দল হিসাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম সরকারি দলের এধরণের ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা মনে করি, চলমান গণআন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নিতেই সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রেসক্রিপশনে মিথ্যাচারের নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে সরকার। আমাদের দলের মাননীয় চেয়ারম্যান জননেতা ববি হাজ্জাজ ষ্পষ্টতই বলেছেন, ষড়যন্ত্র আর মিথ্যাচারই আওয়ামী লীগের চরিত্র।

 

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারায় সাজা কমিয়ে আইনটির নাম পরিবর্তন করে প্রস্তাবিত সাইবার সিকিউরিটি এক্ট গতকাল (২৮ আগস্ট) মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। আইনটি যখন অনুমোদন হয় তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাজানো মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা কারাগারে রয়েছেন। একটি ফেসবুক ওয়েবিনারে অতিথি বক্তা হিসাবে সরকার বিরোধী মন্তব্য করায় অপ্রাপ্তবয়স্ক খাদিজাকে গ্রেপ্তার ছিলো মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন। আমরা অনতিবিলম্বে খাদিজার মুক্তি দাবি করছি। আমরা মনে করি, সাইবার সিকিউরিটি এক্ট জনগণকে ধোঁকা দেবার আরেকটি অস্ত্র। ভিন্নমত দমন করতে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে নিতে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশের সচেতন জনগণ এবং বহিঃবিশ্বের মতামত উপেক্ষা করে এই নতুন সাইবার সিকিউরিটি এক্ট আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে নাই।

 

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে একটি সংবাদ আলোচনায় রয়েছে। একজন গ্লোবাল পারসোনালিটি হিসাবে তাঁর সাথে বিশ্বনেতাদের ব্যক্তিগত পরিচয় থাকার সুবাদে অনেকেই তাঁর প্রতি সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তবে আমরা মনে করি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কোন বিকল্প এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই। আর সেই সরকার কোন আইনি কাঠামোর ভিত্তিতে হবে, সেই সরকারের প্রধান কে হবেন সেসব রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই হতে হবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার কেন্দ্রে রেখে কোন সরকারের ফর্মুলা আমরা মেনে নিব না।

 

 

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ক্ষমতা হারালে তাঁদের পরিণতি কি হবে সেটা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। পাপের বোঝায় আওয়ামী লীগ সরকার আজ এতটাই নতজানু যে তাঁরা এখন পাগলের প্রলাপ বকা শুরু করেছে। আমরা তাঁদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বলতে চাই, জনগণের মতামতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটুন। ইতিহাসের পাতায় স্বৈরাচারদের পরিণতি কি হয়েছে সেসব দেখে শিক্ষা নিন। যদি জনমতকে সম্মান দেখান তাহলে রাজনৈতিকভাবে আপনাদের সহানুভূতি পাবার সুযোগ রয়েছে অন্যথায় যেকোন পরিণতির জন্য আপনারা নিজেরাই দায়ী থাকবেন।

 

জাতীয় পার্টি বর্তমান সরকারের বদান্যতায় সংসদে পরপর দুইবার বিরোধী দলের ভূমিকায় আছে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ২০১৩ সালে সরকার বিরোধী কট্টোর অবস্থান নেবার চেষ্টা করলে তাঁকে জোরপূর্বক সিএমএইচে পাঠানো হয়। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যস্থতায় তখন বর্তমান বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার কিছু বিপদগামী নেতা আওয়ামী লীগের সাজানো নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দলের আসনে বসে। ২০১৮ সালের মধ্যরাতের নির্বাচনেও আওয়ামী সরকারের প্রধান সহযোগী ছিলো জাতীয় পার্টি। সরকার নানা ভয় আর প্রলোভন দেখিয়ে জাতীয় পার্টির নেত্রী, বয়সের ভারে ন্যুজ্জ বেগম রওশন এরশাদকে সামনে রেখে দলটির বিপদগামী কিছু নেতাকে ব্যবহার করে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমরা আশা করব, জাতীয় পার্টি বর্তমান চেয়ারম্যান জনগণের পালস বুঝে এই ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের সাথে বন্ধুত্ব ছিন্ন করে গণআন্দোলনে যোগ দিবেন।

 

দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে ছাত্রলীগ সমাবেশ ডেকে প্রমাণ করেছে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতাকে উষ্কে দিতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণবিস্ফোরণ তৈরি করে বর্তমান স্বৈরাচার, ভোটচোর, লুটেরা সরকারকে বিদায় দিতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ্‌।