সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা শীর্ষক সেমিনার

শনিবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫


জাতির সংবাদ ডটকম।।

‎অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী-পুরুষের গড় সাক্ষরতার হার ৭৭.৯%। পুরুষদের ৮০.১% এবং নারীদের সাক্ষরতা হার ৭৫.৯%। আগে শুধু নিজের নাম লিখতে পারলেই তাকে স্বাক্ষরতা বোঝানো হতো। কিন্তু বর্তমানে সাক্ষরতা মানে বুঝে পড়া, লিখে মনের ভাব প্রকাশ প্রকাশ, গাণিতিক সমস্যার সমাধান বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বোঝানো হয়। তবে নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ শেখানো হলেই বাংলাদেশে সাক্ষরতায় কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হবে। তাই প্রয়োজন নিরক্ষর মানুষের জন্য টেকসই সাক্ষরতা নিশ্চিত করে কর্মমুখী দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করা।

‎শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে নিমো লার্নিং লিমিটেড আয়োজিত সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।


‎আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সেমিনারে এমন অভিমত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা। সেমিনারের আয়োজক নিমো লার্নিং। “সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা” শীর্ষক এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি অভিযোগ করেন, নিম্নমানের প্রাথমিক শিক্ষা পদ্ধতি, কিছু এনজিও’র প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম, গণসচেতনতার অভাব এবং দুর্বল সাক্ষরতা কার্যক্রমের কারণে নব্য সাক্ষরকারী অনেকেই আবার নিরক্ষতায় ফিরে যাচ্ছেন। তাই সাক্ষরতাকে সাফল্যমন্ডিত করতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রমের সংস্কার প্রয়োজন। “গ্রাম শিক্ষা ও বিনোদন কেন্দ্র” নামক পাইলট প্রকল্প নেয়ার পাশাপাশি বর্তমানে চলমান সরকারের কারিগরি শিক্ষাভিত্তিক “স্কিলফো SKILFOÓ” প্রকল্প সারাদেশে ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে।

‎সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার মহোদয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সোহরাব হাসান, সাবেক শিক্ষিকা ও খ্যাতিমান অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে খ্যাতনামা অধ্যাপক এবং একাডেমিয়া লিমিটেডের সম্মানিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ কুতুবউদ্দিন, বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর রবিউল কবির চৌধুরী।

‎সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং নিমো লার্নিংয়ের চেয়ারম্যান জাফর রাজা চৌধুরী। তিনি জানান, নিমো লার্নিং একটি শিক্ষা ও গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুতোষ লেখাপড়ার উপযোগী বই, খেলনা প্রস্তুত করে থাকে। উন্নত বিশ্বের অনুকরণেই শিশুদের শিখনপদ্ধতিতে আধুনিক এবং আনন্দদায়ক করাই নিমো লার্নিংয়ে উদ্দেশ্য। স্কুলগামী একজন শিশু এবং একজন নিরক্ষর মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ব্যবধান শুধু বয়স এবং অভিজ্ঞতার। তাই নিমো লার্নিং নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতা শেখাতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যবই এবং শিখন উপকরণ তৈরির মাধ্যমে শিক্ষামূলক ইভেন্ট, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে। নিমো লার্নিং বিশ্বাস করে ‘প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিটি শিক্ষা উপকরণ শিশু এবং নিরক্ষর মানুষকে জ্ঞান, দক্ষতা এবং মানবিকতা শেখাবে।