
স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর সাপাহারে প্রভাবশালী দখল বাজদের রোষানলে পড়ে কয়েকটি অসহায় পরিবার এখন
সর্বশান্ত। সম্পতির বৈধ দলিল পত্র থাকা স্বত্বেও দখলবাজদের হুমকী ধামকী আর বেআইনী কর্মকান্ডের কারনে স্বাভাবিক ভাবে
সম্পত্তি ভোগ দখল করতে পারছেনা নিরিহ পরিবার গুলো।
সাপাহার উপজেলা শিতলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বাশির এর লিখিত অভিযোগে জানা যায় যে প্রায় ৩০/৩৫ বছর পূর্বে উপজেলার
গোপালপুর মৌজার জে এল নং ৩২, আর এস খতিয়ান ১৬১, দাগ- নং ৩৩৯, ৩৪০, ৩৪১, ৩৪২, ৩৪৩ ৩৪৫ বিলের জমি। জমির দাতা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বনকুল গ্রামের আনজিলা খাতুন দিং জং লোকমান হোসেন নিকট থেকে বিভিন্ন দলিলের
মাধ্যমে মোস:রাবিয়া বিবি স্বামী মৃত, মুসাহাক,মোসা: আবেদা বিবি স্বামী, ইশাহাক মোসা:মরিয়ম স্বামী মৃত আ:লতিব, মো:আজম পিতা, তামিজ উদ্দিন ক্রয় করেন। মোট জমির পরিমাণ ৪.০৪ শতক। তারা সেই জমি চাষাবাদ উপযোগী করে দীর্ঘ ৩০/৩৫ বছর ধরে ভোগদখল করতে থাকেন। নিজ গ্রাম থেকে
জমি দূরে হওয়ার কারনে এবং বিবাদী ভূমি দস্যু আয়েশ উদ্দিনের বাড়ির নিকট হওয়াই দেখভাল করতে কিছুটা সমস্যা হয়। এদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে উপজেলার গোপালপুর হরতকী গ্রামের মৃতঃ খোরশেদ আলমের ছেলে আয়েশ উদ্দীন
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কতিপয় লাঠিয়াল বাহিনীকে নিযুক্ত করে উক্ত সম্পত্তি জবর দখল করে প্রকাশ্য চাষাবাদ শুরু করেন।
এদিকে অসহায় নিরিহ ওই সম্পত্তির মালিকগন সে সময় বেদখল ওই সম্পত্তি উদ্ধার ও ন্যায় বিচারের আশায় স্থানীয় প্রশাসন ও
সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিরাস হয়ে অতি মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। এক পর্যায় গত ২৬/০১/২০২৫ তারিখে নওগাঁ আদালতে দখলদার আয়েশ উদ্দীন সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন উক্ত
মামলা বিজ্ঞ আদালত তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য স্থানীয় ভূমি সহকারি কমিশনার কে দাযিত্ব প্রদান করেন । সংশ্লিষ্ট
গোয়ালা ও শিরন্টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার আলহাজ্ব শামসুদ্দীন সরজমিনে তদন্ত করে গত ১৬/০৩/২০২৫ তারিখে
স্থানীয় এ্যাসিল্যান্ড বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে উক্ত নালিশি সম্পত্তির বিষয়ে স্থানীয় সহকারী ভূমি কমিশনার আবিদা সিফাত দলিল পত্র পর্যালোচনা করে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। উল্লেখিত প্রতিবেদনে
দেখা যায়।বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নওগাঁ- এর ১৬/০১/২০-২৫ খ্রি. তারিখের ১৪৩ নং স্মারক
উপযুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, উল্লেখিত বিজ্ঞ
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নওগাঁ-এর ৭৭মিস/ ২০২৫ (সাপাহার) নং মামলাভুক্ত সম্পত্তি সরেজমিন তদন্ত অন্তে ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা, গোয়ালা শিরন্টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, সাপাহার, নওগাঁ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন দৃষ্টে দেখা যায়, নালিশী সম্পত্তি গোপালপুর মৌজার আরএস ১৬১ নং জে এল নং
৩২ খতিয়ানের রেকর্ডিয় মালিক আনজিলা খাতুন দিং, জং লোকমান হোসেন, সাং- বনকুল, থানা-শিবগঞ্জ। নালিশী সম্পত্তি বিল
শ্রেণির নালিশী সম্পত্তির উত্তরে সিদ্দিক আলীর সম্পত্তি, পূর্বে মোঃ হারুন, দক্ষিণে জারজিস আলী, পশ্চিমে সরকারি খাড়ি রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান যে, নালিশী সম্পত্তি বাদীপক্ষগণ রেকর্ডিয় মালিকগণের নিকট হতে বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন
এবং সম্পত্তি চাষ উপযোগী করে প্রায় ৩০/৩৫ বছর যাবৎ ভোগ দখলে আছেন। বাদীপক্ষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অত্র মোকদ্দমা
দায়ের করেন। বিবাদীপক্ষ দখলের স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই। ইহা মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যপ্রেরণ করেন। এদিকে বিজ্ঞ আদালত উক্ত নালিশী সম্পত্তির উপর ১৪৪/১৪৫ ধারা মোতাবেক স্থিতিশীল রাখার জন্য নির্দেশ জারী করেন স্বারক নম্বার ১৪৩। বিবাদীগণ বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ওই সম্পত্তির উপর চলতি বোরো
মৌসুমে ধান রোপন করেন। কে বা কাহারা গত ১৯/০২/২০২৫ তারিখে ওই ধানের জমিতে আগাছা নাশক ছিটিয়ে ফসল নষ্ট
করে। এ ঘটনায় চতুর আয়েশ উদ্দীন বাদি হয়ে প্রতি পক্ষের আব্দুল বাশির সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল
করেন যা বর্তমানে পুলিশী তদন্ত চলমান রয়েছে। এ ঘটনার কয়েকদিন পর দখলবাজ আয়েশ উদ্দিন আদালতের নির্দেশনা কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে
তার জবর দখল কৃত সম্পত্তির দখল ধরে রাখতে আবারো ধান রোপন করেন। উল্লেখিত ঘটনায় স্থানীয় ভাবে আপোষ মিমাংসার জন্য গত
১৪/০৩/২০২৫ তারিখে সদরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে বৈঠক বসে। উক্ত বৈঠকে আয়েশ উদ্দিন
তার পক্ষে উপযুক্ত দলিল পত্র উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়। তিনি কিছু দিন পরে পুনরায় বৈঠকে বসার জন্য
০৪/০৪/২০২৫তারিখ পর্যন্ত সময় নেন। বৈঠকের ধার্য দিনের আগেই গত ২৮/০৩/২০২৫ তারিখে নালিশী সম্পত্তির ধানের ফসলে আবারো কে বা কাহারা আগাছা নাশক স্প্রে করে সমুদয় জমির ধান বিনষ্ট করে। এ ঘটনাকে পুঁজি করে তিনি আবারো প্রতিপক্ষের অসহায় নিরিহ লোকজনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে মামলা মোকদ্দমা করে হয়রানীর পাঁয়তারা শুরু করে। এই ব্যাপারে আয়েশ উদ্দীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান যে,উক্ত সম্পত্তি খাস হিসেবে তার বাবা পত্তন নিয়েছে । কথিত পত্তনের কাগজ পত্র দেখতে চাইলে পরে দেখাবে বলে ফোন কেটে দেন।