সাপাহারে বিজিবি কর্তৃক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ

বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর সাপাহারে বিজিবি কর্তৃক দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাবু (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পরিকল্পিত ভাবে মাদকের মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আটক ওই ব্যক্তির পিতা সাইদুর রহমান অভিযোগ করেন, গত ১৪ এপ্রিল (রোববার) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সাপাহার উপজেলার খন্জনপুর বাজারের মেরাজ আলীর মার্কেটের সামনে থেকে ৩/৪ জন বিজিবি সদস্য তার ছেলে কে প্রকাশ্য দিবালোকে বাজারের শত শত লোকজনের সমানে থেকে অন্যায় ভাবে আটক করে মারপিট করতে করতে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে তাকে গাড়িতে তুলে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরিয়ে এনে পরদিন গত ১৫ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় ৩৫ বোতল ফেয়ারডিল ও ২৫ বোতল ফেন্সিডিল সহ পত্নীতলা থানায় সোপর্দ করে একটি মাদক সংক্রান্ত মামলা দায়ের করে।
বিজিবির দায়েরকৃত ওই মামলায় পাগলার মোড় সোনাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ ইব্রাহিম এর পুত্র আশরাফুল ইসলাম (৩০), আব্দুল কদ্দুসের পুত্র আপেল (২৪), মিরাজ উদ্দিনের আফতাব উদ্দিন (৩২), আছির উদ্দিনের পুত্র পলাশ (৩৫), সাদেক আলীর পুত্র তরিকুল ইসলাম (৩৪) গন কে পলাতক আসামী হিসেবে দেখানো হয়। ১৪ বিজিবি পত্নীতলার রাধানগর সিমান্ত ফাড়ির নায়েক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বর্নিত তথ্যে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫/০৪/২০২৪ তারিখ বিজিবি স্পেশাল টিম বিশেষ সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিন বিকেল ০৪.৩০ ঘটিকার সময় সীমান্তের মেইন পিলার নং- ২৫৩ এর ১০ আর হতে ১৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পত্নীতলা উপজেলার রাধানগর গ্রামস্থ জনৈক মোঃ সুমন মিয়ার বাড়ী হতে ৫০০ গজ পশ্চিমে সরকারী ফরেষ্ট বাগানের আকাশমনি গাছের নিচে যাহার জি আর নম্বর- ৬৭৪৫৯৮ মানচিত্র
৭৮ সি / ১২০৬ (ছয়) জন ব্যক্তি মাদকদ্রব্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে
অবহিত করে সঙ্গীয় ফোর্সেসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া মাত্রই ০৬ (ছয়) জন ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় আসামী দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাবু (৩৫) কে আটক করা হয়। এ সময় সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পড়ে গিয়ে সামান্য জখম প্রাপ্ত হয়। তাকে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট বিজিবি কর্মকর্তা তার দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন।

এদিকে তাকে প্রকাশ্য সাপাহার উপজেলার জনবহুল খন্জনপুর বাজার থেকে জনগনের সামনে থেকে আটক করা হলেও একদিন পর তাকে পত্নীতলা উপজেলার রাধানগর সীমান্ত থেকে মাদক সহ আটক দেখিয়ে থানায় সোপর্দ ও মামলা দায়ের করার ঘটনাটি এলাকায় সচেতন মহলে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে ওই মামলার বাদী বিজিবির নায়েক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্য নেয়ার জন্য রাধানগর ফাঁড়ির সরকারী মোবাইলে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নি।

এ বিষয়ে উপজেলার ৬ নং শিরন্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দীন জানান, রোববার বিকেলে খন্জনপুর বাজার থেকে বিজিবি সদস্যরা দেলোয়ার হোসেন বাবুকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি তাকে অবহিত করা হয়। এ বিষয়ে তিনি তাৎক্ষনিক খন্জনপুর বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদারের সাথে ফোনে কথা বলেন। সুবেদার সাহেব সঠিক কোন তথ্য দিতে না পারায় তিনি পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিও সাহেব কে ফোন করে আটকের ঘটনা অবগত করে ছিলেন। বিজিবি হেফাজতে তাকে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়। এদিকে পত্নীতলার রাধানগর সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক সহ আটক ও পরদিন থানায় সোপর্দ করে মাদকের মামলা দেয়ার ঘটনা তিনি শুনেছেন।