সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি এক পরিবারের ৩ জন নিহত, আহত ২

রবিবার, আগস্ট ৬, ২০২৩

জাতির সংবাদ ডটকম ডেস্ক।।

সৌদি আরবের দাম্মামে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি একটি পরিবারের ৩ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ২ জন।

গতকাল শনিবার মক্কা থেকে ওমরাহ শেষে দাম্মামে ফেরার পথে আল কাসিম এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন।

দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার মোবাররক শেখ (৪৬), তাঁর ছেলে তানজিল আবদুল্লাহ মাহি (১৭) ও ছোট মেয়ে মাহিয়া (১৩)। আহত ব্যক্তিরা হলেন মোবাররকের স্ত্রী আফরোজা বেগম ওরফে সিমা (৩৬) ও মেয়ে মিথিলা আক্তার ওরফে মীম (২০)। তাঁরা সবাই সৌদি আরবের দাম্মামে থাকতেন।

আজ রোববার দুপুরে ফরিদপুর শহরে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন মোবাররকের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী (৭৫) ও মা আলেয়া বেগম (৬৫)। ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোবাররক ২৫ বছর ধরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে থাকতেন। সেখানে তিনি একটি ওয়ার্কশপের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী–সন্তানেরা তাঁর কাছেই থাকতেন। বড় মেয়ে মিথিলা কিছুদিনের মধ্যেই উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা যাবেন। সে জন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে ওমরাহ পালন করতে দাম্মাম থেকে মক্কায় যান মোবাররক। ওমরাহ শেষে একটি ল্যান্ডক্রুজার নিজেই চালিয়ে সবাইকে নিয়ে দাম্মামে ফিরছিলেন মোবাররক। শনিবার সৌদি আরবের স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে আল কাসিম এলাকায় পেছন থেকে একটি গাড়ি মোবাররকের গাড়িকে অতিক্রম করতে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এ সময় ল্যান্ডক্রুজারটি সড়কে কয়েকবার ডিগবাজি খায়। ঘটনাস্থলেই মোবাররক, তানজিল ও মাহিয়ার মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় আফরোজা ও তাঁর মেয়ে মিথিলাকে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা এখনো চিকিৎসাধীন।

 

মোবাররকের ভাই রায়হান শেখ (৪৩) বলেন, বুধবার রাতে তাঁকে ফোন করেছিলেন ভাই। জানিয়েছিলেন মক্কায় যাচ্ছেন ওমরাহ করতে। এরপর ভাইয়ের সঙ্গে আর কথা হয়নি। শনিবার বিকেল তিনটার দিকে সৌদি আরব থেকে পরিচিত একজন এ দুর্ঘটনার কথা জানান।

ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা শেখ মোহাম্মদ আলী ও আলেয়া বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে মোবাররক ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁদের আদি বাড়ি চরভদ্রাসন এলাকার গাজীরটেক ইউনিয়নের হোসেনপুরে। ৩০ বছর আগে পদ্মার ভাঙনে বসতঘর বিলীন হলে ফরিদপুর শহরে আসেন তাঁরা। মোবাররক সৌদি আরবে যাওয়ার পর তাঁদের পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আসে। তিনতলা একটি বাড়ি তৈরি করেন তিনি।

মোবাররকের বাবা মোহাম্মদ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার কী সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি কী অন্যায় করেছিলাম যে জন্য ছেলে ও নাতি-নাতনির মৃত্যুর খবর শুনতে হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা (ছেলে) ও তাঁর দুই সন্তানের লাশ দেশে এনে কবর দিতে চাই। এ ব্যাপারে আমি সরকারের সাহায্য চাই।