
আদালত প্রতিবেদক: হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মো. আসাদুল ইসলাম এই আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক জালালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আটক রাখার আবেদন বলা হয়, আসামি জালাল আহমদ ঢাবির ২০১৩-২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রবিউল হক ও জালাল এক সাথে ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর রুমে থেকে লেখাপড়া করতেন। জালাল সিনিয়র হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে হলের রুমের ভেতর রবিউলকে নানাভাবে মারপিট করতো এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতেন। গত ২৭ আগস্ট রাত ১২টার দিকে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১২টায় দিকে আসামি জালাল রুমে এসে লাইট জ্বালায় এবং চেয়ার টানা হেঁচড়া করে বিকট শব্দ করতে শুরু করেন। যার ফলে রবিউলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় রবিউল বলেন, ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাবো, আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন। এতে জালাল ক্ষিপ্ত হয়ে তর্কবির্তক শুরু করে। একপর্যায়ে রবিউলকে হত্যা করার উদ্দেশে কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে রবিউল হকের কপালে জখম হয়। পরে রুমের ভেতর থাকা পুরাতন টিউব লাইট দিয়ে রবিউলকে পুনরায় আঘাত করে। রবিউল মাথা সরিয়ে নিলে টিউব লাইটের আঘাত তার বুকের বাম পাশে লেগে সেটি ভেঙ্গে গুরুতর জখম হন। অন্যান্য রুমের শিক্ষার্থীরা আহত রবিউলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। আসামির ঠিকানা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়াধীন। মামলার ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চাঞ্চল্যকর। এমতাবস্থায় তদন্তকালীন সময় আসামিকে জামিনে মুক্তি দিলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মামলার সুষ্ঠ তদন্তের ব্যাঘাত ঘটবে। মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির ঠিকানা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জালালকে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার পর পরই রাতেই জালালকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় বুধবার (২৭ আগস্ট) হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।