এম এ হাই,সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি:
শাহাদত হোসেন এলাকায় গড়ে তুলেছেন সবার জন্য পড়া উন্মুক্ত পাঠাগার। শাহাদাত পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি গ্রামের নুর মোহাম্মাদ এর ছেলে। গরীব ঘরে জন্ম নেয়া শাহাদতের ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা বই পড়া কিন্তু বই কিনে পড়ারমত সামর্থ্য তার ছিল না। অভাব অনটনের সংসারে মা মারা যাবার পর পড়ালেখা আর বেশিদুর আগায়ে নিতে পারেনী শাহাদাত । কিন্তু পড়ার প্রতি তার ছিল ব্যাপক আগ্রহ। সেই অদম্য ইচ্ছা শক্তি থেকেই তার এই পাঠাগার করা। অজোপারাগায় ছেলুনের দোকানে, মসজিদে এবং স্কুলে পাঠাগার গড়ে নিজ এলাকায় জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন শাহাদাত হোসেন। এবার তার এ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেলেন ‘প্রিয় বাংলা পাঠাগার’ পুরস্কার। তার পাঠাগারে মোট বই এর সংখ্যা ১হাজার ৬ শত।
প্রিয় বাংলা প্রকাশনীর উদ্যোগে রাজধানী ঢাকার শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শাহাদাত হোসেনকে ‘প্রিয় বাংলা পাঠাগার পুরস্কার’ দেয়া হয়।
বিশিষ্ট নাট্যভিনেতা আবুল হায়াতের হাত থেকে তিনি এ পুরস্কারের সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র গ্রহন করেন।পাঠাগার গড়ে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর স্বীকৃতি স্বরূপ শাহাদাত ছাড়াও দেশের আরো তিন ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেয়া হয় প্রিয় বাংলা প্রকাশনীর পক্ষ থেকে। পুরস্কার পাওয়া চারজনের প্রত্যেককে দুইশত করে বই উপহার দেয়া হয় প্রকাশনা সংস্থার পক্ষ থেকে।
শাহাদত বলেন, আমি জীবনে আর্থিক দৈন্যতার কারনে বই কিনে পড়তে পারি নাই। বই পড়ার নেশার কারনে স্থানীয় বইমেলা, লাইব্রেরি, ফুটপাত ও অনলাইন থেকে সামান্যবই কিনতাম। পড়া শেষে বইগুলো বাড়িতেপড়ে থাকতো। সেইবইগুলো দিয়ে ছোট্ট পরিসরে প্রথমে পাঠাগার গড়ি। এরপর আমি খেয়াল করে দেখলাম ছেলুনে চুল কাঁটাতে গিয়ে সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হয়। সেলুনের দোকানে বসে থেকে সময় নষ্ট না করে যদি সময়টাকে কাজে লাগানো যায় তাহলে কেমন হয়। এই ভাবনা থেকে সেলুনে তিনি ছোট্ট পরিসরে গড়েতুলেছেন পাঠাগার। এ ছারাও তিনি মসজিদে, স্কুলে গড়ে তুলেছেন পাঠাগার।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো স্বীকৃতি অবশ্যই কাজের গতি বৃদ্ধি করে। এখন আমার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেলো। সবসময় চেষ্টা করবো এই স্বীকৃতির প্রতিদান দিতে।