জামালপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

বুধবার, মে ১, ২০২৪

আবুল কাশেমজামালপুরঃ-

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় স্ত্রী হত্যার দায়ে মিনাল হক (৫২) নামে একজনকে যাবজ্জীবনসহ অতিরিক্ত আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র দায়রা জজ মো. এহ্সানুল হক এ আদেশ দেন। দন্ড প্রাপ্ত আসামী মিনাল হক জেলার মেলান্দহ উপজেলার কলাবাঁধা (গোকুলেপাড়া) গ্রামের আবুল হকের ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবি এডভোকেট নির্ম্মল কান্তি ভদ্র জানায়, প্রায় ২৪ বছর আগে মিনাল হকের সাথে একই উপজেলার বীর হাতিজা গ্রামের বাসিন্দা ময়না শেখের মেয়ে মিনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। এরপর থেকে উভয়ের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় মিনাল তার স্ত্রী মিনা বেগমকে তালাক প্রদান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তার কিছুদিন পর উভয়ের পরিবারের মধ্যে সালিশ-বৈঠকের পর আপোষ মিমাংসা করে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং নারায়ণগঞ্জে গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। সেখানে পরিবারের অনুপস্থিতির সুযোগে মিনাল হক তার স্ত্রী মিনা বেগমের ওপর নতুন করে নির্যাতন চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন। এদিকে ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট মিনাল হক সস্ত্রীক ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়ি এসে প্রচার করে যে, তার স্ত্রী মিনা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তার দুইদিন পর ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ কলাবাঁধা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিমপার্শ্বের পুকুরে ছালার মধ্যে বাঁধা অবস্থায় মিনা বেগমের লাশ পাওয়া যায়। এ সময় স্ত্রীর হত্যাকারী সন্দেহে মিনাল হককে বেঁধে রাখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই রাশেদ শেখ বাদী হয়ে ৬জনসহ অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলার সর্বমোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর মামলার তালিকাভূক্ত ১ নম্বর আসামী মিনাল হকের সংশ্লিষ্টতা আশাতীত প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত ৩০২ ধারা মোতাবেক মিনাল হককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। একইসাথে ২০১ ধারা মোতাবেক তার বিরুদ্ধে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উভয় সাজা একত্রে চলার আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, পিপি এডভোকেট নির্ম্মল কান্তি ভদ্র ও আসামী পক্ষ মামলা পরিচালনা করেন, এডভোকেট মোঃ নুরুজ্জামান ।