দুর্গাপুর গরুর বাজারের হাসিলে বসে মতিউর রহমানের তেলেসমাতি!! গরু হয়ে যায় ছাগল!!

রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪

চুনারুঘাট প্রতিনিধিঃ ঐতিহ্যবাহী চুনারুঘাট উপজেলার দুর্গাপুর গরুর বাজারের হাসিলে বসে মতিউর রহমান নামক এক ব্যক্তি গত ২০ বছর ধরে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন!

 

জানা যায়, আলোর পথে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান দীর্ঘদিন ধরে হাসিলে বসে গরু ছাগল বিক্রয়ের রশিদ লিখেন, কিন্তু তার লেখনীর যাদুতে গরুর রশিদ হয়ে যায় ছাগল! এ যেন ঠিক “শরিফ থেকে শরিফা” গল্পের মতিউর সংস্করণ!

 

গরু বিক্রির পরে ক্রেতা বিক্রেতা যখন হাসিল করতে আসে তখন মতিউর রহমান তার হাতের যাদুতে রশিদ লিখে গরুকে ছাগল বানিয়ে ২০০ টাকা হাসিলে জমা দিয়ে ৮০০ টাকা নিজের পাঞ্জাবীর পকেটস্থ করে নেন!

 

মানে ক্রেতাকে ঠিকই গরু হিসেবে রশিদ দিয়ে ১০০০ টাকা রেখে স্লিপ দিয়ে রশিদ বইয়ের মোড়াতে ছাগল বিক্রির হিসাব লিখে ২০০ টাকা ইজারাদারকে জমা দিয়ে প্রতিটি গরু থেকে ৮০০ টাকা মেরে দেন!

 

এই অপকর্ম তিনি গত পনেরো বিশ বছর ধরে করে যাচ্ছেন।

 

গত ১০ই জুলাই সোমবার হাটের দিন

তিনি (মতিউর) ৪ টি গরুকে ছাগল বানাতে সক্ষম হোন শেষ পর্যন্ত!

 

ইজারাদার মোঃ নুরুল ইসলাম সেই ৪ টি রশিদ যাচাই করে দেখতে পান মতিউর রহমান গরুকে ছাগল বানিয়ে ২০০ টাকা হাসিলে জমা দিয়ে ৮০০ টাকা নিজের পাঞ্জাবীর পকেটস্থ করে নেন!

 

মানে ক্রেতাকে ঠিকই গরু হিসেবে রশিদ দিয়ে ১০০০ টাকা রেখে স্লিপ দিয়ে রশিদ বইয়ের মোড়াতে ছাগল বিক্রির হিসাব লিখে ২০০ টাকা ইজারাদারকে জমা দিয়ে প্রতিটি গরু থেকে ৮০০ টাকা মেরে দেন!

 

এই অপকর্ম তিনি গত পনেরো বিশ বছর ধরে করে যাচ্ছেন অবলীলায়, গত ১০ই জুন সোমবার হাটের দিন তিনি ৪ টি গরুকে ছাগল বানাতে সক্ষম হোন! শেষ পর্যন্ত ইজারাদার সেই ৪ টি রশিদ যাচাই করে মতিউর রহমানের তেলেসমাতির প্রমাণ পান। তার কাছে ঐ ক্রেতা কড়া ভাষায় সেটার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে, জবাবে মতিউর রহমান কিছু বলতে অনিহা প্রকাশ করেন এবং তিনি বলে আপনি পশু কিনতে এসেছে। হাসিল দেখার দায়িত্ব আপনার নহে!

 

গত বছর তিনি একই কায়দায় প্রায় ৪৫ থেকে ৫৫ টি গরুকে ছাগল বানিয়ে হাতিয়ে নেন প্রায় ৩৫/৪০ হাজার টাকা! সেই হিসেবে  মতিউর রহমান গত পনেরো বিশ বছরে আনুমানিক ৭/৮ লক্ষ টাকা মেরে দেন!

 

এ নিয়ে এলাকার লোকজন মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং মতিউর রহমানের ১৫/২০ বছরের চুরির হিসাব এবং বিচার দাবী করেছেন।

এছাড়া এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান দুর্গাপুর আলোরপথে উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় (ইসলাম শিক্ষা) এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি প্রায় দিনই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আশেপাশের গ্রামে জায়গা জমি সার্ভের ধান্ধা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

 

এ ব্যাপারে মতিউর রহামনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।

 

দুর্গাপুর বাজারের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজনের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ এ বিষয়ে বক্তব্য রাজি নন।

 

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর গরুর বাজার ইজারদার নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি উপস্থিত বিষয়টি সমাধান করেছি এবং পুরোপুরি বিষয়টি তদন্ত পুর্বক মতিউরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

উল্লেখ্য যে, দুর্গাপুরের সেই গরুর বাজার ২০০৪ সাল থেকে সুনামের সাথে চলে আসছে, এই বাজারের আয়ের সম্পূর্ণ টাকা খরচ করা হয় মসজিদ মাদ্রাসা এবং আলোর পথে উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়।