সাংবাদিক মেহেদীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

রবিবার, জুলাই ২৮, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।

কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মেহেদীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও নগদ অর্থ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

রবিবার গণভবনে সাংবাদিক হাসান মেহেদীর পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় হাসান মেহেদীর বাবা, মা ও দুই শিশু সন্তানসহ স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেহেদীর পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন এবং ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও নগদ ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

 

হাসান মেহেদী ছাড়াও সহিংসতায় নিহত আরও ৩৩ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের মধ্যে এ আন্দোলনে রংপুরে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারও ছিল।

 

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে টোল প্লাজার ওপরের অংশে গুলিবিদ্ধ হন ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মেহেদী।

হাসান মেহেদী ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সেখানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক দৈনিক বাংলাদেশের আলোর স্টাফ রিপোর্টার ইমাম হোসেন ইমন জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রায় ১০ মিনিট সড়কে পড়ে থাকার পর হাসান মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

 

ইমাম হোসেন ইমন জানান, ওইদিন অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে থেকে পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েই সংবাদ সংগ্রহ করেন হাসান মেহেদী। বিকালে পুলিশের একটি এপিসি থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে টিয়ারশেল ও গুলি ছোড়া হচ্ছিল। এ সময় হাসান মেহেদী গুলিবিদ্ধ হন। তার মুখ, গলা ও বুকে শরীরে অসংখ্য ছররা গুলির চিহ্ন দেখা যায়।

 

এদিকে গত ১৯ জুলাই শুক্রবার সকালে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে হাসান মেহেদীর মরদেহ আনা হয় রাজধানীর রমনার ইস্কাটন গার্ডেনের ঢাকা টাইমস অফিস প্রাঙ্গণে। এ সময় সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানেই তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মেহেদী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় তিনি কেরাণীগঞ্জ এলাকায় পরিবারসহ থাকতেন। তার সাত মাস ও চার বছর বয়সী দুই কন্যা শিশু রয়েছে।

 

হাসান মেহেদীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে। গত ২০ জুলাই দুপুরে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

 

হাসান মেহেদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো। একই সঙ্গে তার মৃত্যু ও হামলার ঘটনা তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) মতো বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করা এ আন্তর্জাতিক সংগঠন।