জাতির সংবাদ ডটকম।।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের পোস্ট অফিস রোডে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল পলি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। নবজাতকের জন্মের পর গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে বিউটি আক্তার (২৩) নামে এক প্রসূতি নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। মৃত্যুর পর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্তের দাবি উঠেছে।
প্রসূতির মৃত্যু ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা ঘটনাটি চাপা দিতে রফাদফার প্রস্তাব দিয়েছে। নিহতের স্বজনরা বিচারের দাবি জানাচ্ছেন এবং অভিযুক্ত চিকিৎসক দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান করছেন।
মৃত বিউটি আক্তার শ্রীমঙ্গল শহরতলীর মুসলিমবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা এবং টমটম চালক সুজন মিয়ার স্ত্রী। তার মৃত্যু শ্রীমঙ্গল উপজেলাজুড়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে, নেটিজেনরা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করছেন এবং তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী করছেন।
প্রসূতির মৃত্যু নিয়ে বিস্তারিত অভিযোগে বলা হয়েছে যে, বিউটি আক্তারকে ৭ সেপ্টেম্বর সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। ডা. রোকসানা পারভীন রোগীকে দেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী সময় পরীক্ষা ফলাফল নিয়ে আবার হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেন। পরে, পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে যাওয়ার পরও চিকিৎসক রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
বিউটির স্বামী সুজন মিয়া বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে, বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আমরা আমার স্ত্রীকে শ্রীমঙ্গল পলি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সেখানে সিজারিয়ানের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর সন্তান প্রসব হয়। কিন্তু সিজার পর আমার স্ত্রীর পেটের অবস্থা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। চিকিৎসকরা জানান, রোগীর অবস্থা গুরুতর এবং দ্রুত সিলেটের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে রাত ৩টার দিকে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী চিকিৎসকদের শাস্তি দাবি করছি।
ঘটনার তদন্তে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. রোকসানা পারভীন এবং ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, রোগীর শারীরিক অবস্থার কারণে দ্রুত অপারেশন করা হয়েছিল এবং তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, “রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমরা চেষ্টা করেছি। রোগীর স্বজনদের চাপের কারণে অপারেশন করতে হয়েছে। আমরা বিষয়টি সামলাতে সক্ষম হয়নি।
মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের ত্রুটি খুঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, “মৃত্যুর খবর পেয়েছি এবং অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি। কারো ত্রুটি প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।