মব কিলিং ও খাগড়াছড়ির ঘটনায় ‘স্পিক বাংলাদেশ’ এর নিন্দা

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহে তোফাজ্জল নামের একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় নাগরিক সংগঠন হিসেবে ‘স্পিক বাংলাদেশ’ গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা এই মর্মে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি যে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড একটি সভ্য সমাজে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চোখের সামনেই এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে গেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সাম্প্রতিককালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায়ও আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এ ধরনের গণপিটুনির ঘটনা একটি নৃশংস ও বর্বর আচরণ, যা সমাজের শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি স্বরূপ। এ ধরনের কর্মকান্ড হাজার হাজার ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ম্লান করে দিতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই যে, অবিলম্বে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক এবং এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রমবর্ধমান বিশৃঙ্খলা, মব জাস্টিস ও অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে সরকারের কাছে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মব কিলিং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম দূর্বলতা ও ব্যর্থতার প্রতিফলন। সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং বিচার ব্যবস্থার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় অবশ্যই ভূমিকা নিতে হবে এবং যে কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

‘স্পিক বাংলাদেশ’ সব সময় মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণপিটুনি সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই প্রতিটি নাগরিকের ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল অপরাধের বিচার আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে। আমরা নিহত তোফাজ্জল ও শামীম আহমেদের জন্য গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমরা সবাইকে মব জাস্টিস ও মব কিলিং বন্ধের জন্য সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই।