পুলিশ অফিসার মাহফুজ্জামান ফিরোজ এর নামে একাধিক অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারে প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান ফিরোজ নামীয় ব্যাক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মোহাম্মদ পারভেজ আহম্মেদ এর ভাইবোন ও পরিবার। ১৮ই নভেম্বর সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ভুক্তভোগী পরিবারে পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোহাম্মদ পারভেজ আহম্মেদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ভুক্তভোগী পরিবারের অন্যান সদস্যগণ ও পারভেজ আহম্মেদ। ভুক্তভোগী পরিবারে একটাই দাবী তার কোটের রায় মেনে নিবেন কিন্তু এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যা নিম্নরুপ-

আমি, মোহাম্মদ পারভেজ আহম্মদ, পিতা- মৃত এ.কে.এম, সৈয়দ আহম্মদ, মাতা- মিসেস পারভীন, ঠিকানা: ট-৫৯, বৈশাখী স্মরণী, মধ্যবাড্ডা, গুলশান, ঢাকা, এই মর্মে আবেদন করিতেছি যে, আমরা ২ ভাই-১ বোন ও মা-বাবা নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলাম। হঠাৎ ২০১০ সালে আমাদের বাসার কাজ করতে গ্রাম থেকে একজন মেয়ে নিয়ে আসা হয়। এক পর্যায়ে আনুমানিক ৮-১০ মাস পর আমার বাবা আমাদের বাসার কাজের মেয়ের সঙ্গে গোপনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে নেমে আসে আমাদের উপর অশান্তির ছাঁয়া। তারই কারণে বাধ্য হয়ে আমার বাবা আমাদের ২টি বাড়ির মধ্যে একটি বাড়ি আমাদের ২ ভাইকে দিয়ে যায়, অন্য বাড়িটি আমাদের সবার ভিতরে ভাগবন্টন করে দিয়ে যায়, যা থেকে আমার ২য় মাতা-সৎ বোন ফ্লোর হিসাবে গুছিয়তনামা দলিল রেজিষ্ট্রি হিসাবে দিয়ে যায়। যেখানে ২য় মাতা বসবাস করছেন। বিবাহের পর কিছু দিন পরপরই কাজের মেয়ে (২য় মাতা) কাউকে না বলে বাসার দামি জিনিসপত্র ও নগদ টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যেত, তাকে কিছু বললে আমাদের সহ বাবাকে নিজে ও লোক দ্বার জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করতো। পরবর্তীতে আমার বাবা বাড্ডা থানায় একটি জিডিও করেন, যার নং-২০১৩, তারিখ: ২৮/১১/২০২২ইং। আমার সৎ মায়ের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বাবা ২য় মাতাকে গত ০৩/১২/২০২২ইং তারিখে ডিভোর্স দেয় (কপি সংযুক্ত)। মানসিক অশান্তিতে অসুস্থ হয়ে। বাবা গত ২২ অক্টোবর, ২০২৩ সালে মারা যান।

 

বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় আমাদের উপর ২য় মাতার বিভিন্ন অন্যায় ও অত্যার, কারণ তার গ্রামের বাড়ির একটি পুলিশ অফিসার (এডিশনাল এসসি, মাহফুজ জামান ফিরোজ) যার সাথে ছিল ২য় মাতার গোপন সম্পর্ক, আমরা জানতাম না। পরবর্তীতে জানতে পারি যে, ২য় মাতার এত শক্তি কোথা থেকে? এক সময় বাবা থানায় জিডিটিও এই এডিশনাল এসপির হস্তক্ষেপে তদন্তে আসতে দেয় নাই। মাঝে মধ্যেই এই এডিশনাল এসপি এলাকার তার পালিত কিশোর গ্যাং দিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন রকম হত্যার হুমকি প্রদর্শন করতো। বিগত ২৬/১১/২৩ইং তারিখে বাড্ডা থানায় আমাদের নামে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায়। পরের দিন পুলিশ আমাদেরকে বাড্ডা থানায় ধরে নিয়ে যায়। এই এডিশনার এসপির নির্দেশে আমাকে ও ছোট ভাইকে ১২/০২/২০২৪ইং তারিখ ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার নিকট ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা দাবি করে, নয়তো সারা জীবন জেলের ঘানি টানতে হবে। আমি নগদ ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা দিয়ে ছুটে আসি, মুক্তিপনের বাকি নয় লক্ষ টাকা ২/৪ দিনের মধ্যে জোগাড় করে দিতে হবে বলে আশস্ত করি। পরবর্তীতে বিগত ১৪/০৩/২০২৪ইং তারিখে এডিশনাল এসপি মাহফুজ জামান ফিরোজ ও আমার সৎ মা তাহাদের পালিত কিশোর গ্যাং দ্বারা ফোনে হুমকি প্রদর্শন করে আমাকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আমি বাড্ডা থানায় একটি জিডি করি, যার নং-১০২৫, তারিখ: ১৪/০৩/২০২৪ইং।

 

বিগত ০১/০৪/২০২৪ইং তারিখে এই এডিশনাল এসপি’র নির্দেশে বাড্ডা থানার পুলিশ ও তাহার পালিত গ্যাং নিয়ে আমার বাসা জোরপুর্বক দখল করতে আসে। বলে, আমি জামাত শিবিরের লোক। পরবর্তীতে এলাকাবাসির সাহায্যে আমি ও আমার পরিবার মুক্তি পায়।

 

বিগত ২৪/০৬/২০২৪ইং তারিখে আমার সৎ মাতা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে আমাদের বাসার সিসি ক্যামেরা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে (সিসি ক্যামেরা ফুটেজ রেকর্ড প্রমানক)। আমি সংগে সংগে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ বাসায় এসে বিষয়টি জানে এবং আমাকে এখনই থানায় অভিযোগ দিতে বলেন কিন্তু পরবর্তীতে এই এডিশনাল এসপি’র নির্দেশে থানা পুলিশ আমার অভিযোগ গ্রহণ করেন নাই। উল্টা গত ২৬/০৬/২০২৪ইং তারিখে আমাদেরকে আসামী করে বাড্ডা থানায় একটি মিথ্যা মামলা রুজু করে, যার নম্বর-জিআর-৩২১/২৪। পুলিশই তদন্তে মামলার বিষয়টি মিথ্যা প্রমানিত হলে ১৫/১০/২০২৪ইং তারিখে ঘটনা সত্যতা নয় মর্মে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন, চুড়ান্ত রিপোর্ট নং-৭২

 

সৎ মাতার চক্রান্তে এডিশনাল এসপি মাহফুজ জামান ফিরোজ এর হুকুমে ০১/০৭/২০২৪ইং তারিখে ভোর ৫- ৩০ মিনিটে ১৪/১৫জন সাদা পোশাকধারী লোক কোন ওয়ারেন্ট, অভিযোগ বিহীন আমার বাসার দারোয়ানকে মেরে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করিয়া আমাদেরকে তুলে নিয়ে যেতে আসে। ঘরের মেইন দরজায় লাথি মেরে দরজা ভাংতে না পেরে চলে যায়। যার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

 

এই এডিশনাল এসপি-কে আমরা চিনতাম না, ২২/০৯/২০২৪ইং তারিখে এডিশনাল এসপি মাহফুজ জামান ফিরোজ আমাদের বাসায় এসে হুমকি দিয়ে বলে আপনার বাড়িটি অবজারবেশনে রাখা হলো। পরে ২৭/০৯/২০২৪ইং তারিখে আবারও এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে আমাদের নিকট ৩০,০০,০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বলে যদি টাকা না দেন তা হলে পরবর্তীতে খুব খারাপভাবেই আসবো। এই বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যায়। আমরা আমাদের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে তার ছবি সংগ্রহ করে এবং অনলাইনের মাধ্যমে তার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারি যে, সে একজন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর এডিশনাল এসপি।

 

আমি গত ২৮/১০/২০২৪ইং তারিখে আমার সম্পদ রক্ষার্থে বিজ্ঞ ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালত, ঢাকা একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করি, যার নং ৮৪১/২৪। আমি বিভিন্ন হয়রানিতে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে এই এডিশনাল এসপি মাসাদুজ জামান ফিরোজের নামে মাননীয় পুলিশ মহাপরিদর্শক, পুলিশ হেড কোয়াটার্স, ঢাকায় একটি অভিযোগ দায়ের করি, সিরিয়াল নং-৬৪৬, তাং ৩০/১০/২৪ইং (কপি সংযুক্ত)।

 

আমি বিভিন্ন দিক-বিদিক না পেয়ে আপনাদের স্মরণাপন্ন হইলাম। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি সাধারণ সাদা-মাটা ভুক্তভোগি পরিবারকে হয়রানিমূলক মিথ্যা অভিযোগ হইতে পরিত্রানের জন্য।