নাসির উদ্দিন মোল্লা ,বিশেষ প্রতিনিধি।।
রাজধানীর দক্ষিণ বাড্ডায় এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী, সাহানার বসতবাড়ির প্রবেশ পথ দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর আব্দুর রহমান নামক এক ব্যক্তির দিকে। অভিযোগকারী সাহানা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বাড়ির সামনের ৮ ফুট জায়গা, যা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খোলা থাকার কথা, তা জোরপূর্বক দখল করে আব্দুর রহমান ভবন নির্মাণ করেছেন।
সাহানার অভিযোগ, এ জায়গা দখলের কারণে তার চলাফেরায় চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। প্রতিবন্ধী অবস্থার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত প্রভাব খাটিয়ে অন্যায়ের মাত্রা আরও বাড়িয়েছেন বলে তার দাবি।
অভিযুক্ত আব্দুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে জানান, তার কর্মকাণ্ড আইনগত। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি কোনো অন্যায় করিনি।” তবে স্থানীয়দের দাবি ভিন্ন। তাদের বক্তব্য, আব্দুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা নন। তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী পরিচয় দিয়ে তার অবস্থানকে পোক্ত করার ভুল চেষ্টা করছেন এবং অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা সাহানার দাবিকে সমর্থন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, আব্দুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে জায়গা দখল করে রেখেছেন এবং প্রভাব দেখিয়ে তা বজায় রেখেছেন। একজন প্রতিবেশী জানান, “সাহানা বহুবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। তার প্রতিবন্ধীতার সুযোগ নিচ্ছেন আব্দুর রহমান।”
রাজউকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৮ ফুট জায়গা ফাঁকা রাখা বাধ্যতামূলক। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তবে তদন্ত কত দ্রুত এবং কার্যকর হবে তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফায়জানুল হক রিজন বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রাস্তা বা বাড়ির সামনের জায়গা দখল করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।”
সাহানার মতো অসহায় মানুষের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ন হলে সমাজে অন্যায় ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। এ ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, প্রভাবশালীদের জোরপূর্বক জায়গা দখল ও ক্ষমতার অপব্যবহারে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই সমস্যার সুরাহা করা এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। সাহানার মতো মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে আইন ও ন্যায়বিচারের ভূমিকা জরুরি।