মাহমুদ-ই-ইলাহী।।
রাসেল খান একজন ফেব্রিক্স ব্যবসায়ী। গাজীপুরে তার ফেব্রিক্স ষ্টোক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দীর্ঘদিন হইতে তিনি ঢাকার বিভিন্ন ফেব্রিক্স প্রতিষ্ঠান হইতে ফেব্রিক্স ক্রয় করেন। ফেব্রিক্স ক্রয়ের সুবাদে কাজলী ওরফে আয়না (৩৮) এর সাথে পরিচয় হয় তার। অদ্য ইং-১০/০১/২০২৫ তারিখ মোবাইল ফোনে ভুক্তভুগিকে ফেব্রিক্স ক্রয় করিয়া দিবে বলিয়া মিরপুর মডেল থানাধীন শেওড়াপাড়া আসতে বলে। ভুক্তভুগি সরল বিশ্বাসে ফেব্রিক্স ক্রয়ের আশায় ইং-১০/০১/২০২৫ তারিখ দুপুর অনুমান ০২:০০ ঘটিকার সময় মিরপুর মডেল থানাধীন শেওড়াপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে বাটা শোরুমের পাশে কাজলী ওরফে আয়নার সাথে দেখা করে এবং ফেব্রিক্স দেখানোর কথা বলে, ভুক্তভুগি রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুর মডেল থানাধীন পশ্চিম শেওড়াপাড়া ইকবাল রোডের একটি ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় থাকা আসামী সুফিয়া বেগম এর বাসার একটি রুমে নিয়ে জোরপূর্বক আরও ৬ জন পুরুষ সহ অন্যায়ভাবে আটক করে।আসামীরা সকলে মিলে তাহাকে এলোপাতাড়ি, কিলঘুষি ও চড় থাপ্পড় মারিয়া জোরপূর্বক টাকা দাবি করে। অতঃপর সকল আসামীগণ একত্রিত হয়ে তাহার সঙ্গে থাকা নগদ ৩৫,০০০/- (পঁয়ত্রিশ হাজার) টাকা সহ তাহার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করে নেয়। আসামীরা ধারালো ছুরি দেখিয়ে তাকে প্রাণ নাশের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে, তাহার নিকট হইতে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।ভুক্তভোগী রাসেল খান আসামীদের দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে, আসামীরা তাহাকে তার মোবাইল ফোনে থাকা বিকাশ ও নগদ হিসাবের পিন কোড নিয়ে বিকাশ এবং নগদের হিসাব হইতে প্রায় ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে তাহার পরনের কাপড় খুলে কাজলী ওরফে আয়নার সাথে অপ্রীতিকর কিছু ভিডিও ধারন সহ তাহার নিকট হইতে তাহারা দেড়লক্ষ টাকা পায় বলিয়া স্বীকারোক্তি আদায় করে। আসামীরা তাহার মোবাইল হইতে তার বাবা-মা ও স্ত্রীর নিকট তার দ্বারা ফোন করিয়ে বিভিন্ন অংকের মুক্তিপণ বাবদ আরো টাকা দাবী করে। অতঃপর রাসেল তার নিকটতম এক বড় ভাই মোঃ এলাহী (৪০) আগারগাঁও এর বাসিন্দাকে ফোন করে তাকে ১,৫০,০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ) টাকা তাহার বিকাশ এবং নগদ নম্বরে কান্নার সুরে পাঠাইতে বলে। তাহার বড় ভাই বিষয়টি বুঝতে পেরে তৎক্ষনাৎ মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ রোমনকে অবহিত করেন। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ রোমন বিষয়টি শুনা মাত্র টহলে থাকা সাব ইন্সপেক্টর মেহেদী এবং নাজমুলকে সহ তার সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনা স্থলে মিরপুর থানা পুলিশ একই তারিখ রাত আনুমানিক ০৯:০০ ঘটিকার সময় উক্ত বাসায় সুদ্বক্ষতার সাথে অভিযান পরিচালনা করে ৫ জন আসামীকে ধরতে সক্ষম হয় এবং রাসেল খান কে উদ্ধার করে। তাদের দলের বাকী ৪ জন সদস্য কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আটকদের কাছ হতে ১টি ধারালো ছুরি, নগদ ১৪,০০০/- (চৌদ্দ হাজার) টাকা এবং ৫টি মোবাইল ফোন ঘটনাস্থলে জব্দ করা হয়।ভুক্তভুগি রাসেল খান জাতির সংবাদ কে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে এত দ্রুত এসে যে আমাকে উদ্ধার করে আমার জীবনকে রক্ষা করবে, তা কল্পনাতেও ভাবতে পারি নাই। তিনি বলেন, আমি মিরপুর মডেল থানার প্রতি অসীম কৃতিজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং সাংবাদিক মাহমুদ-ই-ইলাহী ও সাংবাদিক সাব্বির জুবায়ের এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, এই সাংবাদিক ভাইদের চেষ্টায় পুলিশ আমাকে উদ্ধার করতে পেরেছে। মিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব সাজ্জাদ রোমন জাতির সংবাদ কে জানান, ভুক্তভুগির নিকট আত্মীয় যখন আমার সাথে যোগাযোগ করেন, আমি তাৎক্ষণিক আমার ফোর্স ভুক্তভুগির ঘটনাস্থলে সাথে সাথেই পাঠিয়ে, অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দিই।আটককৃত আসামীদের একজন নাম-কবির, নিজেকে যুবদলের আহবায়ক পরিচয় দেয় এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ২ জন নেতাও থানায় আসে, এই আসামীদের ছাড়িয়ে নেয়ার বিষয়ে তদবির করতে। কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর এবং আসামীদের বিরুদ্ধে আইনের প্রচলিত ধারা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। এই আসামীদের কাজই সরল সাধারণ মানুষগুলোকে এই ধরণের ফাঁদে ফেলে নিঃস্ব করে দেওয়া আসামীরা নিজ মুখে স্বীকার করে এই বিষয়। আমি একজন গণপ্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং আমার প্রধান লক্ষ্য আমার থানাধীন বসবাসকারী সকলের জান-মালের নিরাপত্তা ও সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই আসামীদের নামে এই ধরণের একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, এই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ আবার নতুন করে এক স্বাধীনতা পেয়েছে, অনেক ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে। অতএব, বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তা হয়ে আমি চাইবো না কোন কারণে পুলিশের এই ভাবমূর্তি কখনও ক্ষুন্ন হোক।