আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর দেশজুড়ে সংঘাতের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সেনাপ্রধান বুরহানের নেতৃত্বে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) বেসামরিক নাগরিকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর অভিযোগে তাকে দায়ী করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-বুরহান এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের সেবায় কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে আমরা সেটিকে স্বাগত জানাব।’
মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী স্কুল, বাজার এবং হাসপাতালের মতো সুরক্ষিত স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এছাড়া, মানবিক সহায়তায় বাধা দেওয়া এবং খাদ্য সংকটকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগও রয়েছে এসএএফের বিরুদ্ধে।
গত ৭ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্র মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হামিদতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দাগালো সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর নেতা। দাগালোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, যেমন- বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা ও যৌন সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়।
ওয়াশিংটন আরএসএফ এবং তাদের মিত্র মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে পশ্চিম সুদানের দারফুর অঞ্চলে গণহত্যার অভিযোগও তুলেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে এসএএফ ও আরএসএফের মধ্যে চলমান যুদ্ধে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে এবং সুদান ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সুদানে আট মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তিন মিলিয়ন মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হয়েছে।
জাতিসংঘ সমর্থিত একটি সংস্থা গত মাসে সতর্ক করেছিল যে, দারফুরসহ সুদানের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
ওয়াশিংটনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, সুদানের সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে এবং শান্তি প্রক্রিয়া অগ্রসর হতে বাধা দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘এসএএফ বারবার যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আরএসএফের সঙ্গে মিলে এটি বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।’
ব্লিঙ্কেন আশা প্রকাশ করছেন যে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই সংকট সমাধানে কাজ চালিয়ে যাবে।