
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বয়স অনেক কম। হঠাৎ গুরুতর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এজন্য তার কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে।’ সরকার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে না দেওয়ার জন্য ‘গায়ের জোর খাটাচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাজধানীর খিলক্ষেতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত রাকিবুল হাসানকে দেখতে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেছেন, একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়া থেকে জনগণ ১৫ বছর বঞ্চিত হয়েছেন। সেই বঞ্চনা থেকে আজও মুক্তি মেলেনি। আজও অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার মতো নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে। হাসিনার আমলের সঙ্গে কেন জানি অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু বৈশিষ্ট্য মিলে যায়।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, ভয়ানক গুন্ডা-পান্ডাদের থেকে দেশকে রক্ষা জন্য একজন শ্রমিক, কৃষক তার শরীরের রক্ত ঝরিয়ে রাজপথে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, এই অবদান ভোলার নয়। এই অবদান জাতিকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা জুলাইয়ের ঘটনায় একটা সুষ্ঠু বিচার চাই। আওয়ামী লীগের মতো ঢালাও গ্রেফতার, মামলা করলে কিন্তু মানুষের মন বিগড়ে যাবে। দুর্বৃত্তরা এখনো কেন গ্রেফতার হয়নি, তাদের সাজা কেন এখনো হয়নি? যারা আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিমকে হত্যা করেছে তাদের তো সবাই জানে ও চেনে এবং এটি করেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। কেন তাদের এখনো চিহ্নিত করে বিচারে আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে? কেন পারছেন না? কারণ তাদের কাজের চেয়ে অকাজ বেশি। জনগণের চাহিদা না মিটিয়ে তারা খামখেয়ালি মতো অযৌক্তিক কাজগুলো করছেন।
কেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ কম হবে এমন প্রশ্ন রেখে এই বিএনপি নেতা বলেন, একটি জাতির মুক্তির জন্য ২০-২৫ হাজার ছাত্র রক্ত ঝরিয়েছে। যদি স্বাস্থ্যখাত ঠিক থাকতো তবে তারা কেন দেশের বাইরে যাবে, তাৎক্ষণিক দেশেই চিকিৎসা নিতে পারতো। স্বাস্থ্যখাতে আমাদের এতই অভাব, চিকিৎসার অভাব। এখনো জুলাই-আগস্টে আহতরা হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তাদের আর্তনাদ অন্তর্বর্তী সরকারের কানে যাচ্ছে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই আন্দোলন-সংগ্রাম এবং গণতন্ত্রের লড়াইয়ে যাদের বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই, বরং কখনো কখনো গণতন্ত্রের পক্ষের মানুষকে টিটকারি করেছে তাদের অনেককে উপদেষ্টা করা হয়েছে। সবার কথা বলছি না, কয়েকজন আছে।
রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বাদে অন্য কাজ করছে, জনগণের সেবক হতে পারেনি। তারা যদি সত্যিই সততার ওপর ভিত্তি করে কাজ করতো তাহলে নির্বাচনের ডেডলাইন দিতো, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতো।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মো. আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, সংগঠনের সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন।
এ সময় আহত রাকিবুল হাসানের শরীরের খোঁজ নেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দলটি। রাকিবুলের মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন তারা। রাকিবুলের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা ও সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় এবং যে কোনো প্রয়োজনে রাকিবুল হাসানের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা।
গত ১৮ জুলাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ঢাকার ইসিবি চত্বরে আন্দোলনে অংশ নিয়ে ছাত্রলীগ ও পুলিশের আক্রমণে আহত হন স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী ও ইলেকট্রিশিয়ান রাকিবুল হাসান।