তারেক জিয়ার সমালোচনার প্রতিবাদ করায় চাঁদাবাজির মামলা সাজিয়ে যুবদল নেতা সোহাগ কে গ্রেফতার

বুধবার, মে ২১, ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, মিরসরাই::

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আকবর সোহাগ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মালামাল সরবরাহের ঠিকাদার হিসেবে সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন। তাকে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আটকের জন্য পুলিশ কে চাপ প্রয়োগ করে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের গাড়ী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অটো ইন্ড্রাস্ট্রিজ কারখানার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে । তারেক রহমান চাঁদাবাজ খালেদা জিয়া মুরক্ষ বলায় প্রতিবাদ করেন শওকত আকবর সোহাগ। তাদের অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে মামলা দিলে রাত ১টায় জোরারগঞ্জ থানা ও স্পেশাল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে । চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনা সাজিয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে শওগত আকবর সোহাগকে। ঘটনাটি আজ টক অব দ্যা মিরসরাই।

 

জানাগেছে, সোমবার ( ১৯ মে) রাত ১টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোহাগ উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের বাড়িয়াখালী এলাকার মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২০ মে) বাংলাদেশ অটো ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর পরিচালক কামরুল হোসাইন বাদি হয়ে শওকত আকবর সোহাগকে প্রধান আসামী করে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা ( নং ৯) দায়ের করেছেন।

 

জানা গেছে, সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে জাতীয় বিশেষ অর্থনীতি অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড এর কারখানার সামনে যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুব দলের যুগ্ম সম্পাদক মো. শওকত আকবর সোহাগ। এসময় তার সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আরো কয়েকজন পার্টনার ছিলো। বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড এর কারখানার সামনে হাসিবুল হাসান ও প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুস সামাদ তাদের দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলতে থাকেন, সামনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারেক জিয়া আবার হাওয়া ভবন তৈরি করবে। চাঁদাবাজি আরো ব্যাপক হারে বাড়বে। বিগত সময় অনেক ভালো গেছে, সামনের দিন আরো খারাপ আসবে। এসময় তাদের অশোভন আচরনের প্রতিবাদ করে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শওকত আকবর সোহাগ। তারা তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে বিষয়টি চাঁদাবাজি ঘটনা সাজিয়ে থানার ফোন করে।

 

চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের সহসভাপতি আলাউদ্দিন জানান, শওকত আকবর সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। সেখানে তার পুর্ব পুরুষের অনেক সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেই সূত্রে তার সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ঢাকা প্রধান কার্যালয় সহ স্থানীয়দের সুসম্পর্ক। তাদের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেন। তিনি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ১৭ বছর রাজনীতির করার কারনে জীবনে বহুবার জেল নির্যাতন মোকাবেলা করে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেন। তার সামনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কটু কথা বলার কারনে প্রতিবাদ করেছেন। ঘটনাটি তিলকে তাল করে ভিন্ন রুপ দিয়ে তাকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এঘটনায় পুলিশের পক্ষপতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। আমরা নিরপরাধ শওকত আকবর সোহাগ এর মুক্তি চাই।

 

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ অটো ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর কারখানায় হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কামরুল হোসাইন বাদি হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান আসামী শওকত আকবর সোহাগকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল আউয়াল চৌধুরী জানান, শওকত আকবর সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে শিল্পজোনে ঠিকাদারি ব্যবসার সাথে জড়িত। আমি বিস্তারিত ঘটনা এখনো জানিনা। খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য বলে আমার বিশ্বাস হয়না। এটি সাজানো নাটক। তার অতীতে এ রকম কোন রেকর্ড নেই।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারেক রহমানকে কে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিত ভাবে তাকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান পাগলেও বিশ্বাস করবেনা। এখানে প্রকৃত চাঁদাবাজদের আড়াল করার জন্য সোহাগের উপর অভিযোগের চুরি চালানো হয়েছে। মানুষ এখন এসব বিশ্বাস করেনা।

 

চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের সভাপতি জানান, শওগত আকবর সোহাগ এর ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত নয় । সোহাগ তো অর্থনৈতিক অঞ্চলের ঠিকাদারি ব্যবসা করে। তার প্রতিপক্ষরা তার

জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে চাঁদাবাজির ঘটনা সাজিয়েছে আমার ধারনা।

 

কারন সে সব সময় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কথা বলতো । চাঁদাবাজ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

 

শওকত আকবর সোহাগকে নিয়ে ফেইজবুকে পোস্ট করেন লায়নস ক্লাব চট্টগ্রাম শাখার পরিচালক এজেটএম সাইফুল ইসলাম টুটুল। তিনি লিখেছেন, ” শওকত আকবর সোহাগ , বিএনপি এর তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন নির্ভীক সৈনিক । ছাত্রদল- যুবদলের হয়ে বিগত ১৬ বছর চরম নির্যাতিতদের একজন । দলের প্রয়োজনে নিজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন অগ্রভাগে, কারাবরণ করেছেন অসংখ্যবার। চরম প্রতিকুল অবস্থায় ও দলের প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনায় রাজপথে অবস্থান করেছেন অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে ।

তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে সোহাগ ছিল অন‍্যতম প্রধান টার্গেট ।

দু:সময় কাটিয়ে ৫ আগষ্টের পর যখন ফেসীবাদী শক্তির পতন হলো তার পর থেকে সোহাগ নিজেকে যুছিয়ে নিয়ে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করার মানসে দলীয় প্রধান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং নিজেকে সকল বিতর্কের বাহিরে রাখতে চরম প্রচেষ্টা চালান , এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার সহ অসহায় মানুষের পাশে থাকার মানসে যোগদান করেন আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল এ এবং অনেক সেবা মূলক কাজ করে সফল ও হচ্ছিলেন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি সম্ভাবনাময় মিরসরাই ইকোনোমিক জোন কেন্দ্রিক একজন ব‍্যবসায়ী হিসেবে অন‍্য দশজনের মতো কোটেশন সাবমিট করে কোম্পানীগুলোর মন জয় করে ব‍্যাবসাও পরিচালনা করছিলেন । ইতিমধ্যে বেজা-বেপজা প্রশাসন , মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন , থানা প্রশাসনের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রশংসিতও হয়েছেন ।

দলের দুঃসময়ে অবদান রাখায় দলও তাকে মূল্যায়ন করছিলেন , সম্ভাব্য উত্তরজেলা যুবদলের কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে সোহাগ এর নাম উচ্ছরিত হচ্ছিল সবচেয়ে বেশি, ঠিক সেই সময় রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডার কারনে হাতাহাতি হওয়া ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে একজন সম্ভাবনাময়ী রাজনীতিবিদ এর গায়ে কালিমা লেপন করে তার আসন্ন সফলতাকে ভুলন্ঠিত করা নেক্কারজনক । আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি । আমরা প্রশাসনকে এর সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করার আহ্বান জানাচ্ছি ।