
স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আসন্ন ঈদ-উল-আযহা ২০২৫ উপলক্ষে অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যে ভিজিএফ কর্মসূচির খাদ্যশস্য চাল বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল থেকে উপজেলার গোয়ালা, পাতাড়ী, আইহাই ও শিরন্টী ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে ১০ কেজি করে চাল প্রদান করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যবৃন্দ, ট্যাগ অফিসার, ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং গ্রামপুলিশদের সমন্বয়ে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলার সাথে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
গোয়ালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বলেন, “আমাদের ইউনিয়নে প্রায় ৫,৯০২ পরিবারকে ভিজিএফ চাল দেওয়া হচ্ছে। তালিকা প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে যেন উপকারভোগী একজনও বঞ্চিত না হন।”
শিরন্টী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বোরহান উদ্দীন জানান, “ঈদ সামনে রেখে গরিব-দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটাতে সরকার যে সহায়তা দিয়েছে তা খুবই সময়োপযোগী। আমরা সুষ্ঠুভাবে বিতরণে সচেষ্ট আছি।”
পাতাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের ইউনিয়নের ৩৬৮৪ জন উপকারভোগীর মাঝে নির্ধারিত ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা দিনব্যাপী উপস্থিত থেকে মনিটরিং করছি যেন বিতরণে কোনো অনিয়ম না হয়।”
আইহাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউজ্জামান টিটু (মাস্টার) বলেন, “প্রতিটি সুবিধাভোগীকে যথাসময়ে কার্ড অনুযায়ী সরকারি মানবিক সহায়তার চাল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে বিতরণ করছি। ইউনিয়নের অসহায় মানুষের মুখে সামান্য হাসি আনতে পারাটাই আমাদের বড় অর্জন।”
চাল নিতে আসা বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম (৬৫) বলেন, “এই চালটা না পাইলি ঈদের বাজারে কিছুই করা যাইতো না। সরকারের এই সাহায্যে কিছুটা হলেও হাঁসফাঁস কমল।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাপাহারের সব ইউনিয়নে ধাপে ধাপে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ভিজিএফ বিতরণ কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর নেতৃত্বে মনিটরিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যাতে কোনো প্রকার অনিয়ম না ঘটে এবং প্রকৃত উপকারভোগীরাই এ সহায়তা পান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের যৌথ তত্ত্বাবধানে ঈদের আগে চাল বিতরণের ফলে অসহায় ও দুস্থ পরিবারগুলোর মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।