
মনসুর আহাম্মেদ ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ে ভাড়ায় চালানো অটোরিকশার ব্যাটারি ছিনতাইয়ের জন্য ১৫ বছরের কিশোর চালক রাকিবকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিখোঁজের চার দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার হরিনারায়নপুর গ্রামে একটি আখক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাহাবুব (৩২) ও আব্দুল কুদ্দুস (৩৫) নামে ২ জনকে গ্রেফতার করে।
নিহত রাকিব হরিনারায়নপুর সরকারপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। পেশায় অটোরিকশাচালক রাকিব পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান। তিন মেয়ে আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে চলা দিনমজুর পিতা রফিকুল ইসলাম ছেলের ওপরই নির্ভর করতেন সংসার চালাতে।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে রাকিব প্রতিবেশী সুজন আলীর অটোরিকশা নিয়ে ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত আটটার মধ্যে ফিরবে বলে জানিয়েও সে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন সদর থানায় অপহরণ মামলা করেন রাকিবের বাবা।
পরদিন সকালে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে জানান, রাকিবের চালানো অটোরিকশাটি হরিহরপুর ময়দানে পড়ে আছে। পরে রিকশার মালিক ও স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিকশাটি উদ্ধার করেন। সেখান থেকে ৩শ ফুট দূরের বাঁশঝাড়ে পরে থাকা অবস্থায় ব্যাটারিও পাওয়া যায়।
ওইদিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি মাহাবুব (৩২) ও আব্দুল কুদ্দুস (৩৫) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাকিবকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, “গ্রেপ্তার দুই আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিনারায়নপুরের একটি আখক্ষেত থেকে রাকিবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি আংশিক পচে গেছে, পানিতে ছিল বলে ফুলে উঠেছে। হত্যাকান্ডটি ঘটেছে চার দিন আগে। মূল উদ্দেশ্য ছিল অটোরিকশার ব্যাটারি ছিনতাই।”
এজাহারে রাকিবের বাবা উল্লেখ করেন, “আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আসামি রাহুল রায় তাকে ভগতগাজী এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানেই শেষবার দেখা যায় তাদের দুজনকে। এরপর থেকেই আর কোনো খোঁজ ছিল না।”
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরোয়ার আলম জানান, রাকিবের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।