ভোটারদের ভোগান্তি কমিয়ে উপস্থিতি বাড়াতে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি

শুক্রবার, আগস্ট ২২, ২০২৫

জাতির সংবাদ ডটকম।।

‎ভোটারদের ভোগান্তি কমিয়ে উপস্থিতি বাড়াতে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট প্রদানের সুযোগ দেওয়ারও দাবি করেছেন তিনি।

‎আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ প্যানেলের ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রাফিজ খানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মলেনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক নুসরাত জাহান বক্তব্য দেন।

‎সংবাদ সম্মেলনে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে আগেই বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ভোটের দিন বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত মোড়ের যানজট নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু আমাদের মূল্যায়ন হলো, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।’

‎এই ভিপি প্রার্থী বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে চাই, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব থেকে স্থানান্তর করে হলের পাশে সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটে নিতে হবে। আর শামসুন্নাহার হলের ভোটকেন্দ্র ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিবর্তে পরমাণু শক্তি কমিশন ভবনে করতে হবে। এতে ভোটে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাড়বে।’


‎ছাত্রদের ভোটকেন্দ্রের বিষয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘ছাত্রদের হলের সঙ্গেও ভোটকেন্দ্র নিয়ে দূরত্ব সংকট রয়ে গেছে। মাস্টারদা সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং কবি জসীমউদ্‌দীন হলের ভোটকেন্দ্র উদয়ন স্কুলে করা হয়েছে। এই চার হলের ভোটকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব অথবা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে করা হোক। এই চার হলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

‎এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে সব তথ্য স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে না অভিযোগ তুলে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, ‘এর মধ্যে একটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে হলের পরিচয়পত্র নবায়ন করা। ২০১৯ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে আমরা দেখেছিলাম, হলের পরিচয়পত্র নবায়ন করার খবর ছাত্রছাত্রীরা জানত না। যার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থীই ভোট দিতে পারেনি। সে জন্য হলের পরিচয়পত্রের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ব্যবহার করেই যাতে শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখার দাবি জানাচ্ছি।’


‎উমামা ফাতেমা আরও বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের যেসব শিক্ষার্থী এখনো পরিচয়পত্র পাননি, তাঁদেরকে ভর্তির পে–ইন স্লিপ দেখিয়ে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক। এসব উদ্যোগ নেওয়া হলে ভোটারদের ক্লান্তি, ভোগান্তি কমবে। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।

‎জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিবৃতিনির্ভর ও কাগুজে প্রশাসনে পরিণত হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা প্রশাসনকে আরও কার্যকর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানানোর আগে যেন তারা নিজেরাই ব্যবস্থা নেয়, সেই আহ্বান করছি।’

‎ভোটের দিন নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক প্রার্থী নুসরাত জাহান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য কিছু ভোটকেন্দ্র মূল ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা হলগুলোর পাশে স্থাপনের দাবি আমরা করছি। সে ক্ষেত্রে ওই সব ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার ইস্যু তৈরি হতে পারে। এর ফলে ভোট গ্রহণের পর ব্যালট বাক্স নিরাপদে মূল ক্যাম্পাসে নিয়ে আসতে পুরো ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তার আওতায় আনতে প্রশাসনকে নতুন করে ভাবতে হবে।’

‎এ ছাড়া বাসের ট্রিপ–সংখ্যা বাড়ানো, অনলাইনে নারী প্রার্থীদের নিয়ে সাইবার বুলিং বা হয়রানি প্রতিরোধ করা, আচরণবিধি মানাতে শক্ত হওয়া এবং ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা ও মেডিকেল টিম রাখাতে প্যানেলের পক্ষ থেকে দাবি জানান নুসরাত।