
বেনিয়া ইংরেজের শাসন আর সমাজপতি ব্রাহ্মণদের যৌথ নিষ্পেষণে রাজার জাতী থেকে ভিখারিতে পরিণত হওয়া উপমহাদেশের মুসলমানরা তখন এক ঘোর দুর্যোগপূর্ণ সময় অতিবাহিত করছে। গোটা উপমহাদেশের মুসলমান জাতি তখন হতাশ, অসহায়, সর্বহারা, রিক্ত। এরকম সময়ে মুসলমানদের জন্য হ্যামিলনের বাঁশীওয়ালা হয়ে বাংলার সাহিত্য অঙ্গনে আবির্ভাব ঘটে কবি কাজী নজরুল ইসলামের। তার “ইসলামের ওই সওদা লয়ে এলো নবীন সওদাগর” অথবা “বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা শীর উঁচু করি মুসলমান” এরকম ইসলামী গানের সুরে নির্জীব হয়ে পড়া বাংলার মুসলমানরা নতুন করে জেগে উঠেছিল। এই উদ্দীপনাই ১৯৪৭ এর আজাদী আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলমানদের আলাদা আবাসভূমি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছিল। তার সাহিত্য সুধা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ও বঞ্চিত হয়নি, তিনি অসংখ্য শ্যামা গান, কীর্তন ও জয়গান লিখে গেছেন।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে এক হাতে বাঁশরী অপর হাতে রণ-তুর্যের এই মহাবিদ্রোহী “কারার ঐ লৌহ কপাট” অথবা “দুর্গম গিরি কান্তারের” মত অসাধারণ কিছু রচনা জাতিকে উপহার দিয়ে গেছেন। গান ও সাহিত্যের মত অহিংস সুকুমার কলাকে আশ্রয় করে তিনি ব্রিটিশ ষড়যন্ত্র ডিভাইড এ- রুল পলিসি ছিন্নভিন্ন করার সুনির্দষ্ট লক্ষ্য নিয়ে বহুধা বিভক্ত, নির্জীব ধর্মীয় জাতিগুলোর ভেতর সম্প্রীতি এনে জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনকে বেগবান করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কলমের মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য তার রচনা নিষিদ্ধ এমনকি একাধিকবার তাকে কারাবরণও করতে হয়েছে। কবি নজরুলের অবদান জাতী আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
আজ (২৭ আগস্ট, ২০২৫) জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে বাদ যোহর দলীয় কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল হান্নান নূরের সভাপতিত্বে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন। প্রধান আলোচক দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের সহ আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য শেখ এ সবুর, অতিরিক্ত মহাসচিব কাজী এ.এ কাফী ও মাকসুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক(চট্টগ্রাম) মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, দফতর সম্পাদক মোজাক্কের বারী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম.এ জিন্নাহ, যুব বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।