হাসিনার নির্দেশে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যা চেষ্টা

শনিবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫

জাতির সংবাদ ডটকম।।

পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আজ ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। দেশব্যাপী জুলাই যোদ্ধাদের নির্মুল করতে তিনি এখন বিদেশের মাটিতে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। হাসিনার ল্যাসপেন্সারদের আটক করতে সরকারের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং জাতীয় নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিতে একের পর এক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই নীলনকশার অংশ হিসাবে আজ সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মোস্তফা আল নাফিসের নির্দেশে ছাত্রলীগ কর্মী মোঃ নূর (২৫) জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের গুলশান বাসবভনে প্রবেশ করার সময় মাননীয় চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী কর্তৃক সন্দেহভাজন হিসাবে ধৃত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মোস্তফা আল নাফিজ এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে বোমা মেরে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর আজকের গতিবিধি এবং চলাচল নজরদারিতে এবং ববি হাজ্জাজের সাথে প্রাথমিক সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে সে এই বাসভবনে এসেছে। উপস্থিত দেহরক্ষীরা নূরের মুঠোফোন পরীক্ষা করলে তাঁর এই দাবীর স্বপক্ষে প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পায়। পরবর্তীতে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করি এবং গুলশান থানা পুলিশ নূরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গোয়েন্দা সংস্থা মারফত আমরা আরও জানতে পারি, বনানীতে অবস্থিত এনডিএম চেয়ারম্যান কার্যালয়ে কে বা কারা বোমা সদৃশ বস্তু রেখে যাওয়ার খবরে বনানী থানা পুলিশ আমাদের বনানী কার্যালয় পরীক্ষা করেছে এবং নজরদারির মধ্যে রেখেছে।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এই ঘৃণ্য অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা দৃঢ়কন্ঠে বলতে চাই, খুনি হাসিনার শেষ দোসরটির বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ববি হাজ্জাজ শুধু জুলাই গণঅভুথানের বীর যোদ্ধাই ছিলেন না তিনি ছিলেন হাসিনা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সাহসী কন্ঠস্বর। ২০১৩ সালে র‍্যাব কর্তৃক তাঁকে প্রথমে গুম এবং পরে জোরপূর্বক লন্ডলে পাঠানো হয়েছিলো হাসিনার বিনাভোটের নির্বাচনের বিরুদ্ধে শক্ত এবং সাহসী অবস্থান নেয়ার কারণে। এনডিএম এর অগণিত নেতা-কর্মী আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ধারাবাহিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের মাননীয় চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মেরুল বাড্ডা এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় হাসিনার পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ৫ই আগষ্ট হাসিনা পালানোর পর সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন ববি হাজ্জাজ। তাঁর প্রচেষ্টাতেই হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতি বিশ্বব্যাপী উন্মোচিত হয় এবং টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রিত্ব হারায়। আমরা জাতীয় পার্টিকে গণহত্যার আসামি হিসাবে অভিযুক্ত করে বিচার চেয়ে সমাবেশ করেছিলাম। ববি হাজ্জাজ ধারাবাহিকভাবে হাসিনা এবং আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে রাজপথে এবং টেলিভিশন টক-শোতে সরব রয়েছেন। এজন্য তাঁর প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে চিরতরে নিস্তব্দ করে দিতে পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা নির্দেশ দিয়েছে এবঙ্গ সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতেই আজ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা ববি হাজ্জাজের গুলশান বাসভবনে জড়ো হয়েছিলো।
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যাচেষ্টা মানে জুলাই আন্দোলনের উপর আঘাত। আমরা এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারের কঠোর অবস্থান দেখতে চাই। কিছুদিন পূর্বে আরেক জুলাই যোদ্ধা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর এবং জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুতফর রহমানের উপর হামলা হয়েছে। এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে ক্রাকডাউন চালাতে হবে। প্রশাসনের ভিতরে যারা এখনো অন্তরে শেখ হাসিনা প্রীতি লালন করছে তাঁদের বের করতে হবে।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ঐক্যবদ্ধ লড়াই। বিএনপির নেতৃত্বে আমরা যারা একসাথে আন্দোলন করেছি তাঁরা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলাম। যারা নির্বাচনের পরিবেশ ঘোলা করতে চায় বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নানা শর্ত দিচ্ছে তাঁদের অনুধাবন করতে হবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার সুযোগ পেলে কেউ রক্ষা পাবে না।
ববি হাজ্জাজকে হত্যাচেষ্টার বিরুদ্ধে রাজপথে শক্ত প্রতিবাদ জানাবে এনডিএম। আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে চিরতরে নির্মুল না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।