মিরসরাইয়ের সৈদালী গ্রামে গণহত্যার শিকার ২৩ শহীদের স্মরণে গনকবর সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি

শুক্রবার, মার্চ ১৭, ২০২৩

 

নুরুল আলম, মিরসরাই

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সৈদালী গ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকার ২৩ শহীদকে একস্থানে সমাহিত করার পর শহীদদের স্মরণে গনকবর সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। সীমানা প্রাচীর ও ফলক নির্মানে ১৫ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১১টায় চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। আরো উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান, মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) কবির হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী রনি নাহা, মিরসরাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আহমদ, মিরসরাই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কেএম সাঈদ, মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন, চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু, ফিরোজ কবির , কামরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মাঈনুর ইসলাম রানা, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ভূঁইয়া প্রমূখ ।

জানাগেছে, ৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর চিহ্নিত করে একস্থানে সমাহিত করা হয়। গণহত্যায় নিহতরা হলেন- সৈদালী গ্রামের মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম (হোরা মিয়া), আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মকছুদ আহম্মদ, নজীর আহমদ, সুলতান আহমদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহমদ, আবদুল মালেক, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, সামছুল আলম ভূঁইয়া, নুরুল আলম ভূঁইয়া, ফকির আহমদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসনের জামান, জোবেদা খাতুন, জায়েদ আলী, ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বজলুর রহমান। এর আগে কবরস্থানে যাওয়ার পথ তৈরি করতে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে দুই শতক জমিও কেনা হয়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পরামর্শে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । আজ তিনি নিজে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে শহীদদের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন।

২০১৭ সাল থেকে সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন প্রতি বছর ২০ এপ্রিল দিনটিকে সৈদালী গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। মূলত সংগঠনটির নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতেই সবগুলো কবর এক সঙ্গে সমাহিত করার উদ্যোগ নেয় সরকার ।

সংগঠনটির সভাপতি নাট্য নির্দেশক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সৈদালী গ্রামে পাকিস্তানি জান্তারা অসংখ্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেন এবং লুটপাট চালান। এছাড়া গ্রামের একজন বীর মুক্তিযুদ্ধাসহ ২২ জনকে হত্যা এবং কয়েকজন নারীকে সেদিন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।