মিরসরাইয়ে ই-কমার্স ব্যবসায় বাড়ছে নারী উদ্যোক্তা

শনিবার, মার্চ ১৮, ২০২৩

নুরুল আলম, মিরসরাইঃঃ
বৈশ্বিক করোনাকালীন সময়ে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য নানা উপকরণের যোগান দিতে মফস্বলে গড়ে উঠেছে অনেক ই-কমার্স উদ্যোক্তা । প্রথমে শখের বসে শুরু করলেও ধীরে ধীরে পেশা হিসেবে জড়িয়ে যান। মিরসরাই উপজেলায় বর্তমানে শতাধীক ই-কমার্স উদ্যোক্তা রয়েছে । এসব উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগ হচ্ছেন নারী। স্যোসাল মিডিয়া ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ” মিরসরাই ই-কমার্স ফোরাম” (ম্যাফ) ও সরকারি মার্কেট প্লেস ”লাল সবুজ ডটকম” (অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন) এ নারী উদ্যোক্তারা নিবন্ধিত হয়ে তাদের উৎপাদিত ও সংগৃহীত পন্য বিক্রি করতে পারেন । এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পন্যের ক্রেতাদের বিশাল অংশ রয়েছে ।বর্তমান সময়ে পন্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারনে বেচাকেনা কমে যাওয়ায় এসব গ্রামীন নারী উদ্যোক্তাদের পুঁজিতে টান পড়েছে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন নারী উদ্যোক্তারা।তাদের দাবি নারীদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন ও আর্থিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারী সহায়তার বিকল্প নেই।


মিরসরাইয়ে ই কমার্স নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বেশির ভাগ কাজ করেন হোম মেইড ফুড ও হ্যান্ডি ক্রাফট সামগ্রী, কুশি কাটার নিয়ে।
এদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন যারা তারা হলেন, নাঈমা চৌধুরী, তৃষা অঞ্জুমান,আফরোজা ঈশান , বেনজির জাহান, নাদিয়া চৌধুরী, রাজিয়া সুলতানা তানিয়া, নিশিতা ইসলাম (মোহসিনা), ফেরদৌস আরা, নাসরিন,
মারুফা সুলতানা, সামীনা ইয়াছমিন, মুসলিমা আক্তার, সাদিয়া আফরিন অহনা, আলিফা ইসলাম, সেলিনা আক্তার।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি প্রয়োজন।এজন্য একেবারে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদেরকে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলাই হচ্ছে সরকারের লক্ষ্য।


উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মেহের আফরোজ বলেন, নারীরা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হলে, একটা সময় আর সঙ্কট থাকবে না। আমারা নারীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করছি। ২শতাধিক নারীকে আমাদের অফিস থেকে আয় বর্ধক আত্ন কর্মসংস্থান মূলক সেলাই ও ক্রিস্টাল সামগ্রী তৈরি হ্যান্ডি ক্রাফট তৈরির প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে ।


মিরসরাই উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা (তথ্য আপা) আসমাউল হুসনা তন্বি জানান, গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তারা সরকারি ভাবে “লাল সবুজ ডটকম” প্ল্যাটফর্মে তাদের উৎপাদিত ও সংগৃহীত পণ্য বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন । আগামী ৩ এপ্রিল উপজেলা পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষন চালু হবে । তখন উদ্যোক্তাদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টি হবে।


“মিরসরাই ই কমার্স ফোরাম” (ম্যাফ) এর প্রতিষ্ঠাতা এডমিন শরিফ মাহমুদ জানান, মিরসরাই ই-কমার্স ফোরাম (ম্যাফ) যাত্রা শুরু করেছে ২০০০ সালে। ই- কমার্স উদ্যোক্তাদের মধ্যে বেশিরভাগ হচ্ছে নারী। বিভিন্ন হোম মেইড আইটেম হ্যান্ডিক্রাফট পন্য নিয়ে তারা বেশি কাজ করেন। দিনদিন অনলাইনে কেনাকাটার চাহিদা বাড়ছে। আহামীতে এ ব্যবসার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে ।
নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রথম সারির উদ্যোক্তা নাঈমা চৌধুরী বলেন, মানুষ যখন করোনার ভয়ে গৃহবন্ধী ছিলো তখন আমরা মৃত্যুর ভয় না করে মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পুরন করেছি। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষন, পন্য বিক্রিতে সহায়তা এবং বিনা শর্তে ঋন চালু করা উচিত। নারীদের ক্ষমতায়ন ও আত্মনির্ভরশীল করতে হলে সরকারী সহায়তার বিকল্প নেই।
নাঈমা চৌধুরীঃ
হাতে তৈরি আচার, পিঠা, কেক ও বিরানি নিয়ে প্রচুর রিভিউ রয়েছে নাঈমা চৌধুরীর। পারিবারিক বা উৎসব আয়োজনে নাঈমার হাতে তৈরি মূখরোচক ফুড আইটেম প্লেট জুড়ে থাকে সাজানো থাকে। যোগাযোগ ০১৮৪৩৭৬৩৮১৫।
তৃষা অঞ্জুমানঃ
গৃহ সাজ সামগ্রী , হোম মেইড ফুড, ছোট-বড় মেয়েদের ড্রেস, হ্যান্ডি ক্রাফট নিয়ে অনলাইনে জনপ্রিয় তৃষা । যোগাযোগ ০১৮২৪০৭৬৭৭৫ ।
আফরোজা ঈশানঃ
হাতে তৈরি নানা রকম নানা স্বাধের পিঠািপুলি, মিষ্টি, হোম মেইড খাবার নিয়ে সুনাম ধরে রেখেছেন ঈশান । যোগাযোগ ০১৮৬৫৫৮১৭৫১।
বেনজির জাহানঃ
নিজ হাতে কুশি কাটার বানিয়ে পেয়েছেন প্রচুর সাড়া পয়েছেন বেনজির জাহান। যোগাযোগ ০১৮১২৩৩৮৭৯২।
নাদিয়া চৌধুরীঃ
যে কোন বয়সী ছেলে ও মেয়েদের পোষাক সেলাই ও ডিজাইনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাদিয়া চৌধুরী । যোগাযোগ ০১৮৬৩৫৫৬২৭১।
রাজিয়া সুলতানা তানিয়াঃ
তানিয়া কাজ করেন হোমমেইড কেক ও আইসক্রিম নিয়ে। মোবাইল ০১৭৯৬৫১৭২৫৭।
নিশিতা ইসলাম (মোহসিনা)
তিনি কাজ করেন চোট বড় নকশী কাঁথা নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮৬৬২১৩২৩৩
ফেরদৌস আরাঃ
তিনি কাজ করেন গৃহ সাজ সজ্জা সামগ্রী ও হস্তশিল্প নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮২৩৭৩৫৮৮০
নাসরিনঃ
তিনি কাজ করেন ছোট-বড় নকশি কাঁথা, শাল, টুপি নিয়ে।
যোগাযোগ ০১৩১৭৬৯৪২১০।
তানজিলাঃ
তিনি কাজ করেন বেবী কাঁথা, শাড়ি, ফুতির শোফিজ, বেতের ব্যাগ নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮৫০৩৮০৪৬৪
সাথীয়া জান্নাতঃ
তিনি কাজ করেন শাড়ি,পাঞ্জাবি, মেয়েদের বিভিন্ন কালেকশন নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮২৬৭৪২২৩৯।
ফারহানা আক্তারঃ
তিনি কাজ করেন নকশিকাঁথা, পাঞ্জাবি, শাড়ির আর্ট, রান্নাবান্না ও হ্যান্ডিক্র্যাফট আইটেম নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮২৪৯০৪৪২৯।
নাসরিনঃ
তিনি কাজ করেন ছোট- বড় নকশি কাঁথা, উলের শাল, টুপি নিয়ে।
যোগাযোগ ০১৩১৭৬৯৪২১০
মারুফা সুলতানাঃ
তিনি কাজ করেন হোম মেইড বিভিন্ন আইটেম নিয়ে।
যোগাযোগ ০১৯৩৬৩৬১০১৭।
সামীনা ইয়াছমিনঃ
তিনি কাজ করেন বেবি পোশাক,নকশি কাথা নিয়ে।যোগাযোগ ০১৭৭২৭১৫৪৬৬।
মুসলিমা আক্তারঃ
তিনি কাজ করেন হোমমেড বিভিন্ন ফুড আইটেম, পিঠা এবং হাঁসের মাংস নিয়ে।যোগাযোগ ০১৮২৫৭৬৯৭২।
সাদিয়া আফরিন অহনাঃ
তিনি কাজ করেন এরাবিক ক্যালিগ্রাফি,হ্যান্ডপেইন্টিং পাঞ্জাবী ও মেহেদী আর্টিস্ট নিয়ে।যোগাযোগ ০১৮৭২৫২৯৭৪৬।
আলিফা ইসলামঃ
তিনি কাজ করেন মহিলাদের সব ধরনের পোষাক ডিজাইন,সেলাই নিয়ে।
যোগাযোগ ০১৮৪৯১৮৬৫৪২।
সেলিনা আক্তারঃ
কাজ করেন হোমমেড বিভিন্ন ফুড আইটেম এবং সকল ধরনের জামা কাপড় নিয়ে। যোগাযোগ ০১৮১২৯৯২২৬০।