নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি বাতিলের আহবান

বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫

মোঃ মোহন আলী।। 

আজ বিকালে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) কার্যালয়ের সেমিনার কক্ষে “নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের সরকারি অনুমোদন ও জনস্বাস্থ্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাব” শীর্ষক একটি মতবিনিয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভাইটাল স্ট্রাটেজিএস এর টেকনিকাল এডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন, ও তামাক বিরোধী ডিজিটাল প্ল্যাটফরম স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ এর মডারেটর এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সভায় সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রামস সৈয়দা অনন্যা রহমান।


প্রবন্ধে আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, সম্প্রতি সরকার ফিলিপ মরিসের মতো একটি বহুজাতিক তামাক কোম্পানিকে বাংলাদেশে নতুন তামাক পণ্য ‘নিকোটিন পাউচ’ অনুমোদনের অনুমতি দিয়েছে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি ও নতুন মহামারী হিসাবে দেখা দিবে। পৃথিবীর কয়েকটি দেশে এটি প্রচলিত রয়েছে। এতে দেখা যায়, তামাক পাতা প্রক্রিয়া করে নিকোটিনকে পাউডারে রূপান্তর করা হয় এবং সে পাউডার একটি ছোটো ফাইবার ব্যাগে ভরে বাজারজাত করা হয়, যা নিকোটিন পাউচ নামে পরিচিত। এতে মারাত্মক আসক্তিকারক উপাদান নিকোটিন রয়েছে, যা মানুষকে নতুন নেশার দিকে ধাবিত করবে। তাই অবিলম্বে নিকোটিন পাউচ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, নিকোটিন পাউচ বা নতুন তামাক পণ্যগুলো তরুণ ও অধূমপায়ীদের লক্ষ্য করে বাজারজাত করা হচ্ছে। অল্পবয়সী তরুণদের তামাকের নেশায় ধাবিত করার মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার মাধ্যমে মুনাফা লুটবে তামাক কোম্পানি। মানুষের মৃত্যুর বিনিময়ে তামাক কোম্পানির মুনাফা নিশ্চিত করার সরকারের দায়িত্ব নয়। বরং মানুষকে তামাক কোম্পানির প্রভাব ও নেশা থেকে সুরক্ষার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। তিনি এই ক্ষতিকর পণ্যের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধে সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার এবং জনস্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সক্রিয়ভাবে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রায় রয়েছে যে তামাক কোম্পানিকে নতুন কোন কারখানা স্থাপন করতে দেয়া যাবে না। নতুন কোন কোম্পানিকে তামাকের ব্যবসার করার সুযোগ দেয়া যাবে না। কিন্তু সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘণ করে নিকোটিন পাউচের উৎপাদন করার অনুমতি দিয়েছে, যা সরকারের ভুল নীতি। সরকারের এ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাতিল করে নিকোটিন পাউচ উৎপাদন নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।
সভায় আরো আলোচনা করেন সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, প্রকল্প কর্মকর্তা মিথুন বৈদ্য প্রমুখ। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ইন্সটিটিউট অব ওয়েলবীইংসহ তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দ।