নিজস্ব প্রতিবেদক: মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। এই রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বিদেশি একটি বার্তা সংস্থাও রায় সরাসরি প্রচারের অনুমতি চেয়েছে বলে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে এবং তারা সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ড—প্রত্যাশা করছে। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।’ অপরদিকে, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আসামিদের খালাস প্রার্থনা করেছেন।
এই মামলায় ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতা, স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পরে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হন এবং আদালতে ঘটনার বিবরণ দেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম মামলা দায়ের হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়।
প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই–আগস্টে আন্দোলনরত ছাত্র–জনতার ওপর ব্যাপক আক্রমণ, গুলি, হত্যাকাণ্ড, মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুর, ঢাকা ও আশুলিয়ায় পৃথক হত্যাকাণ্ডসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে।
রায়ের মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত এই মামলার বিচারিক অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব শেষ হতে যাচ্ছে। আগামীকাল সকালেই ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণা করবে