বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এক দল শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত মেহেদী উৎসব রূপ নিয়েছে এক রঙিন ও প্রাণবন্ত মিলনমেলায়। ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবের আমেজ, হাসি-আনন্দে মুখরিত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় দিনটি পরিণত হয়েচে সৃজনশীলতার বর্ণিল উৎসবে।
আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মেয়েদের কমনরুমে এই মেহেদী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভিড় জমাতে থাকেন উৎসবস্থলে। কেউ এসেছেন হাতভর্তি নকশা করাতে, কেউ বা নিজেরাই মেহেদী আঁকছেন অন্যদের হাতে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতায় ফুটে উঠেছে ফুল, আলপনা, জ্যামিতিক নকশা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীকী মোটিফ।
কেবল মেহেদী আঁকাই নয়, উৎসবে ছিল রঙিন সাজসজ্জা, ক্ষুদ্র প্রদর্শনী ও চিরকুটে মনের ভাব প্রকাশের ব্যবস্থা। মেয়েদের কমনরুম জমে ওঠে গল্প, আড্ডা আর হাসির রোল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উৎসবটি একসময় রূপ নেয় পুরো ক্যাম্পাসের আনন্দ-উৎসবে। বর্ণিল নকশা, প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাস আর শিক্ষার্থীদের হাসিখুশি উপস্থিতিতে দিনভর মেহেদী উৎসবে বেরোবি ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে আনন্দময়, স্মরণীয় এক পরিবেশে।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর নিশিতা পাগলা বলেন, নিরস পড়াশোনার মাঝে এমন আয়োজন মনকে খুব ফ্রেশ করে। মেহেদী তো শুধু হাতে নয়, সবার মনেও একটা আনন্দের ছাপ রেখে গেছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া জিম বলেন, ছোট ছোট আয়োজনই ক্যাম্পাসের পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে। আজকে সবাই হাসছে, ছবি তুলছে, আড্ডা দিচ্ছে এই মুহূর্তগুলোই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকে। মেহেদীর নকশায় আমাদের সংস্কৃতি ও শিল্পের মিশেল আছে। শিক্ষার্থীরা এত সুন্দরভাবে অংশ নিয়েছে দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। আমি চাই প্রশাসন যেন এমন উৎসবকে আরও উৎসাহ করে।
শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আনন্দিত আয়োজকরা জানান, শুধু বিনোদন নয়, নিজেদের সংস্কৃতি, সৌন্দর্যচর্চা ও বন্ধুত্বকে একসঙ্গে উদযাপন করতেই এমন আয়োজন। ভবিষ্যতে এটিকে নিয়মিত উৎসব হিসেবে চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
আয়োজক কমিটির সদস্য ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মোছাঃ উম্মে হানি জোহরা বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু একটা আনন্দময় আয়োজন করার ইচ্ছা থেকেই মেহেদী উৎসবের আয়োজন। সবাই যে এতটা উচ্ছ্বাস নিয়ে অংশ নেবে তা ভাবিনি। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, শিক্ষার্থীদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করেছে। শিক্ষার্থীরা আমাদের জানিয়েছেন এই উৎসব যেন আমরা প্রতিবছর আয়োজন করি।