জাতির সংবাদ ডটকম।।
৩ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার উপমহাদেশের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ, চিন্তাবিদ, নির্ভিক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব মোরশেদের ৪৪তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ স্মৃতি সংসদ এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে নানা আয়োজনে যথাযথ মর্যাদার সাথে মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়।
সকাল ১০টায় মরহুমের বনানীস্থ কবরে মরহুমের জ্যেষ্ঠ পুত্র সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের নেতৃত্বে পরিবারের পক্ষ থেকে এবং সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে পুস্প অর্পণ করা হয়। এর আগে ফাতেহা পাঠ ও কোরআনখানির আয়োজন করা হয়। এসময় মরহুমের পুত্র সৈয়দ মাখদুদ মোর্শেদসহ স্মৃতি সংসদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার নেতৃত্বে মরহুমের কবরের পুস্প অর্পন এবং ফাতেহা পাঠ করা হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব আরকে রিপন, আবু তাহের চৌধুরী, কাজী সালাউদ্দিনসহ প্রমুখ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমে বক্তারা বলেন, ইতিহাসের কালজয়ী মহাপুরুষ ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ, তিনি যুদ্ধোত্তর (১৯৪৩) ব্রিটিশ ভারতে মানবতার সেবায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম সংস্থাটির মাধ্যমে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। এই মহাপুরুষ ১৯১১ সালের ১১ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেছেন। ৪০ দশকে তিনি একজন মননশীল লেখক হিসেবে তার পরিচিতি সর্বোত্র ছড়িয়ে পড়ে। বিখ্যাত গার্ডেন পত্রিকায় তার বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। স্টেসম্যান পত্রিকায় কায়দে আজম সম্পর্কে সমালোচনাও করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে তিনি যুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৪ সালে তিনি হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে তিনি নিযুক্ত হন। ১৯৬৪ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। বিচার জীবনে তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও প্রজ্ঞার পরিচয় সর্বজনবিদিত। তিনি বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও প্রিয়জন মানুষ ছিলেন। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্ম বার্ষিকী কমিটি গঠনের তিনি তৎকালীন সরকারের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে অগ্রনায়কের ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব ছেড়ে আগড়তলা ষড়যন্ত্রের মামলায় বঙ্গবন্ধু ও তার সহযোগীদের পক্ষে লড়াই করেছিলেন। ন্যায় বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন আপোষহীন। ইতিহাসের এই বীর পুরুষের মৃত্যু হয় ১৯৭৯ সালের ৩ এপ্রিল। নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর ইতিহাস তুলে ধরা খুবই প্রয়োজন। নেতৃবৃন্দ মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং আল্লাহ-তায়ালা যেন তাকে জান্নাত দান করেন সেই জন্য বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন।
এছাড়াও পারিবারিকভাবে মরহুমের ৪৪তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া এবং দারিদ্রদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়।