জাতির সংবাদ ডটকম।।আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। মহান মে দিবসে শ্রমিক সমাবেশ ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এ শোডাউন করবে দলটি। এ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংকট দুরীভূত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন জানান, মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের ব্যানারে আগামী ১ মে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশ ও শোভাযাত্রা হবে। তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ কর্মসূচি সফল করতে সার্বিকভাবে কাজ করছে মূল দল বিএনপি।
সংসদ বিলুপ্ত, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা
রাজনৈতিক জোট এবং দল। প্রথা ভেঙে এবার রমজান মাসেও রাজপথে আন্দোলন করেছে দলগুলো। এ অবস্থায় আন্দোলনের গতি বাড়াতে ঈদুল ফিতরের পর আগামী ১ মে অনুষ্ঠেয় কর্মসূচি বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপি মহাসচিব এ কর্মসূচি সফল করতে শ্রমিক দলকে বিশেষ তাগাদা দিয়েছেন। কর্মসূচিতে শ্রমিক সংগঠনসহ শ্রমজীবী যত মানুষ আছে, তাদের সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
মতবিনিমসভায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবীর খান, ফিরোজ-উজ-জামান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মিজানুর রহমান চৌধুরী, জাকির হোসেন, কহিনুর মাহমুদ, হামিদা খাতুন, মফিদুল ইসলাম মোহন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মহানগরের সুমন ভুঁইয়া, কাজী শাহ আলম রাজা, বদরুল আলম সবুজ প্রমুখ।
সভায় নেতাদের বক্তব্য শোনার পর আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের শ্রমিক সমাবেশ সফল করতে শ্রমিক দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনে শ্রমজীবী মানুষ অত্যন্ত মানবেতর দিনযাপন করছে। একদিকে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে, কর্মপরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শ্রমিকরা বেকার হচ্ছে; অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশাহারা। এ অবস্থায় মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংকট দুরীভূত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।
চলমান আন্দোলনে শ্রমজীবী মানুষকে অধিকতর সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন ছাড়া এ দেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই তারা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সচেষ্ট নয়। তাই শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থবিরোধী ও ম্যান্ডেটবিহীন এই সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।
