স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁয় জাতভেদে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আমের বানিজ্যিকরাজধানী হিসেবে খ্যাত সাপাহার উপজেলায় আম পাড়া শুরু হবে আগামী ২২ মে থেকে। এদিন গুটি আম পাড়ার মধ্য দিয়ে আম পাড়া শুরু হবে।
গত রোববার ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় একথা জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) খালিদ মেহেদী হাসান। সভায় আমচাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উক্তনসভায় জানানো হয়, জেলায় ২২ মে থেকে গুটি জাতের আম পাড়া যাবে। উন্নত জাতের আমের মধ্যে গোপালভোগ ২৮ মে ও খিরসাপাত বা হিমসাগর ২ জুন থেকে পাড়া যাবে। নাগ ফজলি ৭ জুন, ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙ্গা ১০ জুন, ফজলি আম ২০ জুন ও আম্রপালি ২২ জুন থেকে পাড়া যাবে। সর্বশেষ ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারী-৪ এবং গৌরমতি জাতের আম পাড়তে পারবেন চাষিরা। তবে আবহাওয়া, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতসহ বিশেষ কারণে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আগে আম পাড়া যাবে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গতবারের চেয়ে এবার নওগাঁর বাগানগুলোতে আমের ফলন ভালো হয়েছে। বাগানের গাছগুলোতে গতবারের চেয়ে আম ধরেছে বেশি। তবে গাছে আম বেশি ধরার কারণে এবং এপ্রিল মাসে দুই-তিন সপ্তাহ জুড়ে তীব্র তাপদাহের কারণে আমের আকার এবার কিছুটা ছোট হতে পারে। আমের আকার ছোট হলেও গাছে আম বেশি ধরায় আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কম হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
আম চাষে নওগাঁর চেয়ে আয়তনের দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়। তবে আমাদের আম বাগানগুলো নতুন হওযায় এতে ফলন বেশি হয়। নওগাঁ আম চাষে আয়তনের দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও আম উৎপাদনে নওগাঁ জেলা প্রথম স্থান দখল করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে নওগাঁয়। গত বছর নওগাঁ জেলা থেকে ৭৭ মেট্রিক টান আম বিদেশে রফতানি হলেও এ বছর প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বেশ কিছু আম চাষিকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী উত্তম কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করে আম চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সাপাহার উপজেলা কৃষি অফিসার শাপলা খাতুন বলেন, চলতি বছরে এই উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হচ্ছে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ১৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিলো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এই বছরে উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে।এছাড়াও আমচাষীদের সকল ধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে।
প্রতি বছরে এই উপজেলায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে আম বাগান। এই বছরেও আম বাগান বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে গাছ গুলো নতুন হওয়ায় সেগুলো থেকে ফল আশা করছেননা আমচাষীরা। যার ফলে গড় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
অন্যান্য বছরের ন্যায় চলতি বছরেও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে আম রপ্তানি করা যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আমচাষীরা।