স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সবার আগে কৃষি, শিল্প এবং শিক্ষায় স্মার্ট হতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে এরই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে হবে। মন্ত্রী স্মাট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহকে নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনে উৎসাহিত করতে ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় বিয়াম মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
সাবেক সচিব ড. খোন্দকার শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. কামরুল হাসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম) রিয়ার এডমিরাল মো: খুরশেদ আলম (অব:) এবং সংগঠনের মহাসচিব রাশেদুল হাসান শেলি বক্তৃতা করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলকে কৃষি প্রধান অঞ্চল উল্লেখ করে বলেন, আইওটি প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষি ও মৎস্য চাষে বিপ্লব ঘটিয়ে এই অঞ্চলকে স্মার্ট অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, ২০০৯ সালের পর ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে। ময়মনসিংহকে কৃষিপ্রধান অঞ্চল থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি দক্ষতা সম্পন্ন অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি কৃষিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তিতে শতশত বছর পিছিয়ে থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ফলে গত ১৪ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশে কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়ন চলছে। স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রাম এগিয়ে নিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহবাসিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের ঘাঁটি। এখানকার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে যেমন ভাল বেসেছেন বঙ্গবন্ধুও তাদের অফুরন্ত ভালবাসতেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতির পিতা বেতবুনিয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ –এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন এবং খুলনায় ক্যাবল শিল্প প্রতিষ্ঠা করে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ অংকুরিত করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার প্রযুক্তি সাধারণের নাগালে পৌঁছে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর অংকুরিত বীজটি চারা গাছে এবং ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তা বিরাট মহিরূহে রূপান্তর করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে তিনি পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতায় উপনীত করেছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ এবং রিয়ার এডমিরাল মো: খুরশেদ আলমকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। মন্ত্রী তাদের মধ্যে সম্মানননা হস্তান্তর করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে চেয়ারম্যান, অধ্যাপক ডা: কামরুল হাসান খানকে নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং রাশেদুল হাসন শেলীকে মহাসচিব করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের আগামী তিনি বছরের জন্য নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়