আপত্তিতে ঝুলেই থাকলো বিতর্কিত গণমাধ্যম কর্মী আইন

মঙ্গলবার, অক্টোবর ২৪, ২০২৩

 

      ।। এম আবদুল্লাহ ।।

 

গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২ বর্তমান সংসদে আর পাশ হচ্ছে না। বিলটি পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দিতে আরও ৯০ দিন সময় নিয়েছে জাতীয় সংসদের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সোমবার নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পারায় সংসদে আরও ৯০ দিন সময় চান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ সময় সময় বাড়ানোর প্রস্তাবটি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ভোটে দিলে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠ ভোটে তা অনুমোদন হয়। এর মধ্য দিয়ে এই বিলটি আবার স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হলে চলতি সংসদে আর পাস হচ্ছে না। কারণ সংসদে চলতি অধিবেশনটিই একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন। এই অধিবেশন চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত:, বিএফইউজের পক্ষ থেকে আমরা এই আইনের অনেকগুলো ধারার বিষয়ে আপত্তি দিয়েছি। প্রস্তাবিত এই আইনের ৫৪টি ধারার মধ্যে কুড়িটিরও অধিক ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয় বলে মনে করি আমরা। সার্বিকভাবে এই আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এ ধরনের আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা বার বার উল্লেখ করেছি। যদিও সরকারপন্থী সাংবাদিক ইউনিয়ন কয়েকটি সংশোধনী দিয়ে দাবি করে আসছিল আইনটি দ্রুত পাশ করা জন্যে।

আলোচ্য বিলটি গত বছরের ২৮ মার্চ সংসদে উপস্থাপন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তখন বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পেরে গত ৬ জুন ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল সংসদীয় কমিটি। এরপর আগস্টে আবার দ্বিতীয় দফায় ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নেয় সংসদীয় কমিটি। এরপর এ বছর ৮ জানুয়ারি আবারও বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে ৯০ (তিন মাস) দিন সময় নেওয়া হয়। দীর্ঘ ৬ মাস পর গত ৫ জুন এ বিলটির জন্য আবারও ৯০ দিন সময় নেয় সংসদীয় কমিটি। সোমবার (২৩ অক্টোবর) আবারও ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাস সময় দেওয়া হলো। আর এই সময় যখন বাড়ানো হলো তখন সাত দিন পর নতুন সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হবে।
এ দিকে প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে সাংবাদিক, সম্পাদক ও মালিকপক্ষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ আছে। গত বছর আইনের খসড়া সংসদে তোলার পর থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন আইনের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে। প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন ২০২২’ পাস হলে এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে বলে মনে করছে সম্পাদক পরিষদ।