আবুল কাশেম জামালপুর।।
জামালপুরে স্ত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৭আগষ্ঠ)দুপুরে জামালপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো: রফিকুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: আকরাম হোসেন জানান, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত ইয়াসমিন আক্তার নামে এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করে প্রেমানন্দ ক্ষত্রিয় ওরফে শুভন আহমেদ নামে এক ব্যাক্তি। ইয়াসমিন আক্তারের ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান ছিলো, সন্তানের পালক বাবা হিসেবে নিজেকে মেনে নিয়ে শুভন চুক্তিবদ্ধও হয়। বিয়ের পর থেকেই শুভন স্ত্রী ইয়াসমিনকে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার একাধিক জমি নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
তার জের ধওে ২০২০ সালের ১ জুলাই রাতে স্ত্রী ইয়াসমিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে সিলিন্ডার গ্যাসের জলন্ত চুলার উপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় শুভন। এতে সারা শরীরে আগুন লেগে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয় ইয়াসমিন। পরে প্রতিবেশীরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে দেওয়ানগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ও পাস্টিক সার্জারি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ইয়াসমিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে সে মারা যায় । এ ঘটনায় ইয়াসমিনের বড় বোন হাজেরা বেগম বাদী হয়ে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় ১৫ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যদানের ভিত্তিতে আসামী প্রেমানন্দ ক্ষত্রিয় ওরফে শুভনকে দোষি সাব্যস্থ্য কওে আদালত তাকে মৃত্যুদন্ড এবং এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেয় আদালত। নিহত ইয়াসমিন আক্তারের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় এবং শুভনের বাড়ি ময়মনসিংহে। চাকরিসূত্রে তারা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: আকরাম হোসেন আরো জানান, এই মামলায় বাদি পক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে, আমরা মৃত্যুদন্ডের আদেশে সন্তুষ্ট। আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: দিদারুল ইসলাম বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট না, খুব দ্রুত উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান।