শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শনিবার, মে ৪, ২০২৪

শ‌হিদুল ইসলাম :

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড হীথ এবং১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর গভীর শোক প্রকাশ করায় সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন । তিনি যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া অভিনন্দন বার্তায় বাংলাদেশ ওযুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসামান্য প্রবৃদ্ধিঅর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্বের নজরএখন ২০৩০ সালের মধ্যে ৯ম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারএবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।” তিনি’বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং’বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড’ চালু করার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।

 

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসেহোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীরশ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

 

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম জাতির পিতা ওএকাত্তরের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।”

 

হাইকমিশনার বিগত ছয় বছরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু, বিমান চলাচল এবং প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্নক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সহযোগিতা সহ অগ্রগতির কথা তুলে ধরে এই মাসের শেষেরদিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো হোম অফিস সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন।

 

তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রে অব্যাহত সাহায্য সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য যুক্তরাজ্যকে শক্তিশালী কুটনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান।

 

পেনি মর্ডান্ট এমপি তাঁর বক্তব্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমাদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নতরাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকার অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেন।

 

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ যুক্তরাজ্যের স্পিকার, হাইকমিশনার এবং বিশিষ্ট অতিথিদেরসাথে নিয়ে বাংলাদেশে হাই কমিশনের বিশেষ প্রকাশনা “মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন”-এর মোড়ক উন্মোচন করেন এবং বাংলাদেশের দুই মহান বন্ধু লর্ড মারল্যান্ডএবং লর্ড স্বরাজ পলের হাতে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।

 

অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিলো বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও অবদানের ওপর বিশেষ প্রদর্শনী এবং জাতির পিতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধদের উৎসর্গ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিকপরিবেশনা। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী শাড়ির একটি বিশেষ প্রদর্শনী আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে।