নিজস্ব প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন সরকারী বরাদ্দের প্রকল্পে কোন কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন পরিষদে হত দরিদ্র প্রকল্পের (৪০দিনের) কর্মসূচীর সমস্ত টাকা ৫ নং ওয়ার্ডের মোতালেব মেম্বারসহ নিজের ভাইকে নিয়ে সরকারী বরাদ্দের পুরোটা আত্মসাৎ করে নেয়।
অভিযোগে আরো বলা হয়,সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাহমুদার দাখিলকৃত ৬নং ওয়ার্ডে বুরিরবাধ-জহিরাবাদ পর্যন্ত মাটি ভরাটের কাজ ৭৭ জন লেবার দেখিয়ে পাশ করিয়ে ঐ সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে পুরো টাকাই কামাল চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিরা আত্মসাৎ করেন।
জানাযায়, ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মতি মিয়া কামাল চেয়ারম্যানের অন্যতম অংশীদার। ঐ ওয়ার্ডের মুর্শিদ আলম, মুজিবুর, মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন , প্রায় ২ বছর ৬ মাস পূর্বে তাদের ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট করিয়ে তাদের নামে মোবাইল কোম্পানীর সিম রেজিস্ট্রেশন করেন সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার আলপনা। মতি মেম্বার ও আল্পনা মিলে কামাল চেয়ারম্যানের হত দরিদ্র প্রকল্পে ২৯৮ জনের ১৬,৫০০ টাকা করে ৫ বারে প্রায় ২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। অথচ যাদের নামে বরাদ্দ তারা কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাইফুল্লাহ ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দাখিল করেন। ভুক্তভোগীদের এখন একটাই চাওয়া যে তাদের টাকার দরকার নাই কিন্তু তাদের নামে নিবন্ধিত মোবাইল কোম্পানীর সিমগুলো তাদের হাতে ফেরত দেওয়া হোক। সিমগুলোর ব্যপারে তারা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। তাদের সিমগুলো যদি চেয়ারম্যান কিংবা তাদের লোকেরা কোন খারাপ কাজে ব্যাবহার করে তাদের ফাসিয়ে দিতে পারে বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেন।
এদিকে, ১নং ওয়ার্ডের মতি মেম্বার কামাল চেয়ারম্যানের আরও একটি পুকুর চুরির স্বাক্ষী। তাহলো উত্তর গনেশপুর খেয়াঘাট যার ইজারা পাওয়ার জন্য সুজন রবিদাস (পাটনী) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে ২লাখ টাকায় ইজারা পাওয়ার জন্য আবেদন করে ৫০ হাজার টাকা বিডি প্রদান করেন। উদ্দেশ্য সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করা। জনস্রূতি রয়েছে কামাল চেয়ারম্যান নিজে চার লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে মাত্র ১৯৫০০ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম ভাঙিয়ে নিজ প্যাডে লিখিত করে জুবায়েদুল্লাহকে ঘাটের ইজারা বুঝিয়ে দেয়। যেখানে প্রতিদিন ২৫০০-৩০০০ লোক খেয়া পারাপার হয়।
জনপ্রতি ৫টাকা নিলে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫০০০ টাকা ভাড়া আদায় হয়। সেই খেয়াঘাট মাত্র ১বছরের জন্য ১৯৫০০ টাকায় ইজারা দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চেয়ারম্যান নিজে অনৈতিকভাবে লাভবান হন বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের মুটোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। প্রত্যেকটি প্রকল্পের কাজ স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে লেবার দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় এমপি মহোদয়ের মৌখিক নির্দেশে ঘাঁটের ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে একজনকে দেওয়া হয় অন্যরা তো বাদ পড়বেই। ঘাটের ইজারা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছে।
সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৪,৫,৬ ও ৭নং সুতার পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের তাসলিমা খাতুনের সঙ্গে অভিযোগের ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ভুলবশত অভিযোগ করেছিলাম পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।