চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে সুষ্ঠু তদন্তসহ পুনঃনির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

মঙ্গলবার, জুন ১১, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।
চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই মোটর সাইকেল মার্কার প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের লোকজন দলীয় প্রার্থী জাহির করে আমাকে ও আমার কর্মী সমর্থকদের উপর ব্যাপক হুমকি-ধামকি ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। এ বিষয়ে আমি চরফ্যাশন থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ করি এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মোটর সাইকেল প্রতীকের কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিং এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দিয়ে জাল ভোট, ভোট ডাকাতি ও সিল মারার সুযোগ করে দিয়েছে মোটর সাইকেল প্রার্থী জয়নাল আবেদীন।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ধরেন ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফিরোজ প্লাবন কিবরিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. ফিরোজ প্লাবন কিবরিয়া বলেন, নির্বাচনের দিন প্রায় সকল কেন্দ্রে আমার ঘোড়া মার্কার কোন এজেন্টকে কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং কোথাও কোথাও নির্বাচনের আগের রাতেই ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। অনেক কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। যা আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিষ্ট্রেটগণদেরকে বার বার জানিয়েছি।

উল্লেখ্য আসলামপুর ইউনিয়নে আবুগঞ্জ বাজার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সালেক মুহিদ মহোদয়কে ভয়-ভীতি দেখানো আমার কয়েকজন এজেন্টকে ডেকে এনে বিষয়টি প্রমাণ করেছি। পরবর্তীতে তিনি আমার এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢোকার জন্য বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক বিহীন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন , অথচ আমার উপজেলায় দলীয় প্রার্থী পরিচয়ে স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এর নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার প্রভাব বিস্তার করেছে মোটর সাইকেল প্রতীকের লোকজন। যা উক্ত নির্বাচনের ভোট ডাকাতির কারণ। মোটর সাইকেল প্রার্থী মোঃ জয়নাল আবেদীন নির্বাচনের বিভিন্ন প্রচারণায় বলে বেড়িয়েছেন স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব খামারবাড়ীতে এক বর্ধিত সভায় বলেছেন, সাবেক সাবেক সাবেক অর্থাৎ জয়নাল আবেদীনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচনে কাজ করতে হবে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন ঘোষণার পরিপন্থী। তার এমন বক্তব্যের ভিডিও আমার কাছে রয়েছে।

এছাড়া কিশোর ছেলেদেরকে দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার মহোৎসব করেছে মোটর সাইকেল প্রতীকের লোকজন। আমি বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছি। যাহার ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে রয়েছে।

বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, কেন্দ্র পরিদর্শনে বিভিন্ন সাংবাদিকদের জরিপে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ৮-১০% ভোটার উপস্থিতি থাকলেও মাত্র এক ঘন্টায় বিকেল ৪টায় ভোট দেখানো হয়েছে ২২-২৩%। তা কিভাবে সম্ভব আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে চাই।ভোটারশূন্য চারফ্যাশন উপজেলা নির্বাচন শিরোনামে বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন পোর্টালে নিউজ হয়েছে ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অন্যান্য উপজেলায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ৩-৪ ঘন্টায় হলেও আমার উপজেলায় ৭/৮ ঘন্টায় ফলাফল ঘোষণা হয়। যা একটি সাজানো ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণার নিদর্শন বলে আমি মনে করি। আমার উপজেলার ১৩১টি কেন্দ্রের কাস্টিং ভোটের মুড়িতে রাখা ভোটারদের টিপ ও স্বাক্ষর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমি আপনাদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিনীত আবেদন করছি। কারণ প্রকাশ্যে সিল মারা, মৃত ব্যক্তির ভোট, জাল ভোট ও ভোট ডাকাতিসহ ব্যাপক অনিয়ম এই নির্বাচনে দৃশ্যমান, যার প্রমাণাদী আমার কাছে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফিরোজ প্লাবন বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচন একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, দলীয় প্রভাবমুক্ত, দলীয় মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক বিহীন নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও আমার উপজেলায় এমন প্রহসন ও দলীয় প্রভাবের নির্বাচনে শুধু আমি ব্যাথিত নয়, চরফ্যাশন উপজেলার লাখো লাখো ভোটার ও জনগণ ব্যাথিত এবং নিরবে কাঁদছে আমার এলাকার ভোটারগণ। তাই আমি এই ভোট ডাকাতির সুষ্ঠু তদন্তসহ পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।

এছাড়া আমি প্রধানমন্ত্রীর সকল উন্নয়নের ও নৌকা প্রতীকের সর্বোচ্চ প্রচারক ও একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আমার এই দাবিটুকু প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।