আবুল কাশেম জামালপুরঃ-
জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই এখন সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্প। জানাযায়,প্রতিবছর নদী ভাঙনের শিকার যমুনাতীরবর্তী মানুষগুলোর কাছে সরকারের দেয়া আশ্রয়ন প্রকল্প গুলো আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সম্প্রতি উপজেলায় যমুনার দুর্গম সাপধরী ই্উনিয়নের চেঙ্গানীয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে ঠাঁই হয়েছে নদীভাঙা ও অসহায় ৪০টি পরিবারের। আশ্রয়ন প্রকল্পে বিনামূল্যের ঘর পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা।
প্রায় বিগত ১০ বছর আগে ময়মনসিংহের জহুরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় পানফুল বেগমের। অসহায় পানফুল অভাবের তাড়নায় ছোট বেলায় পাড়ি জমান ঢাকা শহরে। চাকরী নেয় গার্মেন্টসে। সেই থেকে পরিচয় স্বামী জহুরুল ইসলামের সাথে। পরিচয় থেকে বিয়েতে গড়ায় তাদের জীবন। তাদের কুলজুড়ে আসে কন্যা সন্তান। এরপর থেকেই স্বামী আর খোঁজ নেয়নি, স্বামী আরেকটি বিয়ে করায় দেখতে আসেনি মেয়ের মুখও।
সদ্যজাত মেয়ে নিয়ে পানফুলের আশ্রয় হয় দিনমজুর বাবার ঘরে। বাবার ভিটেমাটি না থাকায় দিনমুজর কাজ করেই চলতো তার জীবন। এরপর থেকেই আশ্রয় নিয়েছেন এক বাড়ি থেকে অন্যবাড়ি। অবশেষে পানফুলের আশ্রয় হয়েছে চেঙ্গানীয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে। মাথা গোঁজার ঠাঁই আর সরকারের ভাতা আর হাঁস-মুরগি পালন ও যমুনার চরে ফসল তুলেই চলছে ফুটফুটে সন্তানকে নিয়ে তার জীবন। শুধু পানফুলই নন, সাপধরী ইউনিয়নে যমুনার ভাঙন ও অসহায় নিঃস্ব ৪০টি পরিবারের আশ্রয় হয়েছে চেঙ্গানীয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ২৮জুন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি ঘরে গিয়ে আশ্রিতদের দলিল হস্তান্তর করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মন্ডল বলেন, সরকার বিনামূল্যে গুচ্ছগ্রামে ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। দূর্গম চরগুলোতে গুচ্ছগ্রাম তৈরি করায় অসহায় পরিবারগুলোর মাথাগোঁজার ঠাই হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়ন প্রকল্পে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান- দূর্গম যমুনার চরসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে অসহায়,নদী ভাঙ্গনে আশ্রয়হীনদের জন্য গুচ্ছগ্রাম নির্মান করা হয়েছে। এতে অসহায় পরিবারগুলোর প্রতিটি ঘর দুই লাখ পয়ত্রিশ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও আশ্রয়ন প্রকল্পে কমিউনিটি সেন্টার নির্মিত হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম জানান, যমুনার দুর্গম সাপধরী ই্উনিয়নের চেঙ্গানীয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে মূলত নদী ভাঙন ও অসহায় আশ্রয়হীন ৪০টি পরিবারকে ২৮জুন ঘর ও দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে।