আঞ্চলিকতার টান থেকে বের হতে পারাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ : সংবাদ পাঠিকা রুমানা

মঙ্গলবার, মে ৯, ২০২৩

জাতির সংবাদ ডটকম।।
চট্টগ্রামের মেয়ে দেওয়ান রুমানা আফরোজ। মিডিয়া জগতে পরিচিতি রুমানা আফরোজ নামে।

দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ ও নার্গিস জাকিয়া সুলতানার নম্র ভদ্র সুশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত কন্যা রোমানা।

সংবাদ পাঠ উপস্থাপনায় মিডিয়াপাড়ায় খুব আলোচিত নাম রুমানা। জাতির সংবাদ ডটকম এর পাঠকদের জন্য রোমানার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

 

 

প্রশ্ন: সংবাদ পাঠ উপস্থাপনায় আগমন কখন ?

রুমানা : টেলিভিশনে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পাঠ ২০০৯ সালে সময় টেলিভিশন এর মাধ্যমে। তবে ভয়েজ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছি বাংলাদেশ বেতার এ ১৯৯৫ থেকে।  পরে ২০০৭ থেকে চট্টগ্রামে রেডিও ফুর্তিতে রেডিও জকি হিসেবে কাজ শুরু করি চট্টগ্রামের প্রথম আরযে হিসেবে।

 

প্রশ্ন: অনুপ্রেরণা কে যুগিয়েছেন ?

রুমানা : মিডিয়াতে কাজ করছি একদম ছোটবেলা থেকেই। আমার প্রথম মঞ্চে নাচ আর গান করা হয়েছে ১৯৯১ সালে। শুরু থেকেই আমি কালচারাল পরিবেশে বড় হয়েছি। আমার পরিবারে আমার আব্বু, মেজ চাচা, চাচাত ভাই, আমার ছোট ভাই সকলেই মিডিয়ার বিভিন্ন সেক্টরের আছে। বলা যায় আমার পরিবার ই আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আর এখন সব কাজ করার মূল শক্তি আমার মেয়ে।

 

প্রশ্ন: বর্তমানে কি করছেন ?

রুমানা : বর্তমানে বৈশাখী টেলিভিশনে সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে আছি এবং সাথে “মুগ্ধ” নামে একটি জামদানীর অনলাইন পেইজ এই ওনার।

 

প্রশ্ন: প্রশিক্ষন কোথায় নিয়েছিলেন ?

রুমানা : সংবাদ পাঠের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ নেই নাই কখনো। তবে ছোটবেলায় শুদ্ধ উচ্চারনের জন্য বোধন এ ট্রেইনিং নিয়েছিলাম।

 

প্রশ্ন: সংবাদ পাঠক উপস্থাপনায় কোন বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে ?

রুমানা : প্রথমে অবশ্যই সুদ্ধ উচ্চারন। আর বিশেষ করে আঞ্চলিকতার টান যেন না আসে তা খেয়াল রাখতে হবে।
আর এখন সংবাদ মানেই কিন্তু শুধু স্ক্রিপ্ট পড়া না, লাইভ করতে হয়, রিপোর্টারের সাথে কথা চালিয়ে যেতে হয় তাও লাইভ, সুতরাং সেই ক্ষেত্রে নিউজ সম্পর্কে অবশ্যই ধারনা থাকতে হবে। প্রতিদিনকার সংবাদ জানতে হবে। কমন সেন্স থাকতে হবে।  প্রেজেন্স অফ মাইন্ড হতে হবে।

 

প্রশ্ন: সংবাদ পাঠিকার কি গুণ থাকা প্রয়োজন ?

রুমানা : চট করে যে কোন প্রশ্নের জবাব সঠিক ভাবে,  সঠিক শব্দ ব্যাবহার করে সর্ট টাইমে প্রেজেন্ট করার ক্ষমতা। আর উত্তরদাতার যেনো মনে হয় আপনি গল্প করছেন, প্রশ্ন নয়।

 

প্রশ্ন: প্রতিযোগিতার এই সময়ে চ্যানেল গুলোতে সংবাদ উপস্থাপনায় বৈচিত্র আনতে কি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ?

রুমানা : আমাদের কন্টেন্ট এর অভাব। আমরা প্রশ্ন করি আক্রমণাত্মক ভাবে। তবে আমার মনে হয় গল্পের ছলে সংবাদ উপস্থাপন হলে দর্শক সহজেই গ্রহন করবেন, বুঝতে পারবেন।

 

প্রশ্ন: কোথায় কর্মরত আছেন কত দিন ধরে আছেন ?

রুমানা : বর্তমানে বৈশাখী টেলিভিশনে আছি, সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার পদে। ২০১২ থেকে এখনো পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।

 

প্রশ্ন: আগামী চিন্তা ভাবনা ?

রুমানা : বর্তমানে সংবাদ পাঠের পাশাপাশি জামদানী নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী পন্যকে দেশ ও দেশের বাহিরে সমৃদ্ধ করাই আমার প্রচেষ্টা থাকবে।

 

প্রশ্ন: সফলতা ও ব্যর্থতা ?

রুমানা : সম্প্রতি ইউএসএ র  ইউএস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে এশিয়ার সেরা সংবাদ পাঠিকা হিসেবে এওয়ার্ড দিয়েছে আমাকে। আমি মনে করি দেশ পাশাপাশি দেশের বাহিরেও আমার কাজেত এই সিকৃতি আমার কাজ,  প্রতিষ্ঠান আর দেশ কে আলাদা সম্মান এনে দিয়েছে।

 

প্রশ্ন: স্বরণীয় মুহুর্ত ?

রুমানা : আমার মেয়ে যখন জন্ম নিলো। আমার মেয়ে “মালিয়াত আলম” আমার পুর পৃথিবী এখন।

 

প্রশ্ন: সুখের স্মৃতি ?

রুমানা : স্মৃতি বলবো কিনা জানিনা তবে সব এচিভমেন্ট ই আমার জন্য সুখের, সেই ছোট বেলার খেলাঘর এর প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার নেয়া থেকে শুরু করে, জাতীয় পর্যায়ে পুরষ্কার পাওয়া হোক, আর লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার ২০০৫ এর টপ ১২ তে থাকা হোক, আর আমার করা নিউজ রিপোর্ট সমাদৃত হওয়া। অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রির সফর সংগি হয়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করা আর সংবাদ সংগ্রহ করা যাই হোক না কেন, আমার কাছে সব ই সুখের মুহুর্ত।  তবে আমি মনে করি আমি অনেক লাকি। কারন বিয়ের আগে বাবা মা এর ব্যাকআপ পেয়েছি একদন কোন বাধা ছাড়া। আর বিয়ের পর পাচ্ছি জামাই এর। মেয়েদের কাজ করার ব্যাপারে কিন্তু পরিবার অনেক বড় ফ্যাক্ট। আমি সেইক্ষেতে অনেক ভাগ্যবান।

 

প্রশ্ন: চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে আপনার মতামত ?

রুমানা : চট্টগ্রাম অনেক রিচ কালচারের দিকে। আসলে আমার কাছে মনে হয় সংকৃতিক যে রুট সেইটা আমাদের চট্টগ্রামি ধারন করে আর লালন করে। আজকে আমি যাই করছি না কেন, তা আমি মনে করি ডিসি হিল এ নজরুল জয়ন্তি অথবা পহেলা বৈশাখ, অথবা বিভিন্ন পালা পর্বনে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাওয়ার কারনেই নিজেকে তৈরি  করতে পেরেছি।চট্টগ্রামের এত্ত বড় মঞ্চ যে কোন মিডিয়া ব্যাক্তিত্বের জন্য এ্যসেট। তবে স্পেশালি সংবাদ পাঠ এর জন্য আমি মনে করি চট্টগ্রামের ভাষা আর তার আঞ্চলিকতার টান থেকে বের হতে পারাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।