সাংবাদিক নাদিম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি

শনিবার, জুন ১৭, ২০২৩

 

 

আবুল কাশেম জামালপুর প্রতিনিধিঃ-

 

নির্ভিক সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখা।

শনিবার সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

 

হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জেলা জেএসডির সভাপতি আমির উদ্দন, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমএ জলিল, জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল, জামালপুর টেলিভিশন রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি ফজলে এলাহী মাকাম, জামালপুর সচেতন নাগরিক কমিটি সনাকের সভাপতি অজয় কুমার পাল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক রমেন বনিক, জেলা দ্ুপ্রকের সদস্য আশরাফুজ্জামান ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুুমন মাহমুদ প্রমুখ।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন নাদিম হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর নামে হত্যার মূলহোতা হিসেবে অভিযোগ উঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। আমরা নাদিম হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এসে শাস্তি দাবি করছি।

 

মানববন্ধনে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, নির্ভিক সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের মূলহোতা ছিল বকশীগঞ্জের তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যক্তি সন্ত্রাসী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। তিনি প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই এবং দ্রুত বিচারের মাধ্যমে তাদের এই শাস্তি সম্পূর্ণ করার দাবিও জানান।

 

জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমএ জলিল বলেন, আমরা প্রখর রোদে দাড়িয়ে আজ আন্দোলনে নেমেছি। সাংবাদিকরা হলো এই সমাজের বিবেক, সমাজের দর্পণ। সেই দর্পণ যদি ঘোলা হয়ে যায়, তাহলে সমাজও ঘোলা হয়ে যাবে। কাজেই সাংবাদিকদের যারা মুখ, চোখ বন্ধ এবং হত্যার করার চেষ্টা করছে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, আজকে যারা এ কাজে উৎসাহিত করছে সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে তারা এই সমাজকে বিব্রত করছে। জামালপুরের শান্ত পরিবেশকে দুই একটি ঘটনায় কলঙ্কিত করেছে। সাংবাদিক নাদিম হত্যাকান্ডে শুধু জামালপুরে নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ ফুঁসে উঠেছে। কাজেই সাংবাদিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল বলেন, একজন সাংবাদিকের প্রাণহানির মধ্যদিয়ে জামালপুরসহ গোটা বাংলাদেশে আজ কলঙ্কিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জামালপুর একটি শান্তিপ্রিয় শহর। জামালপুরের ইতিহাসে এই প্রথম সাংবাদিক নাদিমের রক্তে রঞ্জিত হয়ে আমাদের পবিত্র মাটি আজ কলঙ্কিত হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

 

মানববন্ধনে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি,পেশার মসনুষ অংশ নেন।

 

উল্লেখ্য, বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ী ফেরার সময় পাটহারি মোড়ে ওতপেতে থাকা ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করে। হামলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় সাংবাদিক ও পথচারীরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে রাতেই তাকে ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি আনুমানিক আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।