ঈদে আনন্দ নয়, নিরাপত্তা নিয়েই ব্যস্ত পুলিশ সদস্যরা

শনিবার, জুন ৭, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:পবিত্র ঈদুল আজহা—ইসলামী ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। এই দিনটি ঘিরে সারা দেশের মানুষ যখন আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগিতে মগ্ন, তখন সেই আনন্দের পেছনে নিশ্চুপভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ঈদের দিনেও দায়িত্বপালনে ছিলেন তারা, যেন নাগরিকরা নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে ঈদ উদযাপন করতে পারেন।

শনিবার (৭ জুন) রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, গুলশান আজাদ মসজিদসহ বিভিন্ন ঈদ জামাতস্থলে ছিল পুলিশের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। দিনের শুরু থেকেই র‌্যাব, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা টহলে ছিলেন শহরের গলি থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত।

পুলিশ জানায়, ঈদের আগে রাজধানী থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় শহরের অনেক এলাকাই ফাঁকা হয়ে যায়। এই সুযোগে চুরি, ছিনতাই কিংবা ডাকাতির মতো অপরাধ যেন না ঘটে, সেজন্য নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও শনিরআখড়ার বাস টার্মিনালসহ শহরের প্রধান প্রবেশ ও প্রস্থানমুখে বসানো হয় চেকপোস্ট।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কন্ট্রোল রুম থেকেও চালানো হয় সার্বক্ষণিক নজরদারি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, প্রতিবছর ঈদে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দায়িত্ব পালন করি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে নগরবাসীর আনন্দঘন ঈদ উদযাপনে অংশ হতে পারা।

গুলশান আজাদ মসজিদে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঈদের দিনে আনন্দ করতে না পারলেও আমরা গর্ববোধ করি এই ভেবে যে, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের কাঁধে। নামাজ পড়েছি দায়িত্বপালনের মাঝেই, কিন্তু শান্তি পাই এই চিন্তায়—আমাদের কারণে অন্যরা নিশ্চিন্তে ঈদ উদযাপন করতে পারছে।

সাধারণ মানুষও পুলিশের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।

রাজধানীর গুলশান এলাকার এক বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, আসলে ঈদের সময় সবাই চায় পরিবার নিয়ে আনন্দ করতে। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পরিবারের কাছে যেতে পারেন না ঈদের ছুটিতে। তাদের মধ্যে পুলিশ অন্যতম। নিজের আনন্দ না করে নগরবাসী যেন ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারে এজন্য পুলিশ দায়িত্ব পালন করে প্রতি বছরই। তাদের এই কার্যক্রমকে আমি একজন নাগরিক হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই এবং সম্মান জানাই।

এর আগে শুক্রবার (৬ জুন) জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, সারাদেশে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। তারাও ছুটিতে যাননি সবার নিরাপত্তা দিতে। ঈদের সময়ে চুরি ছিনতাই বেড়ে যায়। ফাঁকা ঢাকায় কেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজধানীর নিরাপত্তায় ৫০০ পেট্রোল টিম কাজ করবে। তারা অলিগলিতেও কাজ কাজ করবে।