সোনাইমুড়ীতে দোকান দখল করে পাঠাগার, থানায় অভিযোগ জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে

সোমবার, জুন ২৩, ২০২৫

 

আবদুল বাসেদ নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি –

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি দোকান জোরপূর্বক দখল করে ‘ইসলামিক পাঠাগার’ স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। দোকান মালিক মোহাম্মদ হারুন ও ভাড়াটিয়া মো. মাহফুজুর রহমান দাবি করেছেন, আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন দলবল নিয়ে দোকানটি দখল করেছেন, ফলে তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

 

শনিবার (২২ জুন) বিকেলে ভাড়াটিয়া মাহফুজুর রহমান সোনাইমুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে জায়গার মালিক মোহাম্মদ হারুন আদালতে মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের ভদ্রগাঁও এলাকায়। অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মৃত ফজলুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে তিন শতক জমি কিনেছিলেন তৎকালীন ইউনিয়ন আমির তোফায়েল আহম্মদ মাস্টার। যদিও জমি কেনার পর সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ হয়নি।

 

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ হারুন দাবি করেন, সেই জমির পাশেই তার মালিকানাধীন দোকানঘর রয়েছে, যা তিনি ভাড়া দেন। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বর্তমান ইউনিয়ন আমির আলাউদ্দিন ও তার কর্মীরা জমি দখলের চেষ্টা শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ভাড়াটিয়ার মালামাল বাইরে ফেলে দিয়ে দোকানটি তালা মেরে দখলে নেন।

 

হারুন আদালতের আশ্রয় নিলে সোনাইমুড়ী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই ফরিদ উদ্দিন জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে মোহাম্মদ হারুনকে চিহ্নিত করেন। এরপর আদালত জামায়াত নেতাদের হাজিরার নির্দেশ দিলেও তারা তা অমান্য করেন।

 

পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে হারুন তার ভাড়াটিয়া মাহফুজুর রহমানকে পুনরায় দোকান বুঝিয়ে দেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আবারও পাঠাগার স্থাপনের নামে দোকানটি দখল করা হয়। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ফার্নিচার ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে দাবি করেন মাহফুজ।

 

তিনি জানান, গত ১৫ বছর ধরে তিনি সেখানে ব্যবসা করছেন এবং এক বছর আগে তিন লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে নতুন চুক্তি করেছিলেন। দুই দফায় তার দোকানের মালামাল বাইরে ফেলে দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।

 

বিষয়টি জানতে চাইলে আমিশাপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, তারা ২০০৯ সালে ইসলামিক পাঠাগারের জন্য জমি কিনেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারা সেখানে কিছু করতে পারেননি। বর্তমান সরকারের পতনের পর তারা জমি বুঝে নিতে গেলে দোকানটি তাদের কেনা জমির ওপর নির্মিত বলে দাবি করেন। কোন ভাবেই তারা জায়গার মালিক নয়। জায়গার প্রকৃত মালিক পাঠাগার। এ নিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

 

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন,ব্যবসায়ী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। তাদের দুই পক্ষের মধ্যে জায়গা নিয়ে ঝামেলা চলছে। সোমবার বিকেলে থানায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিবাদমান দুপক্ষের কথা শুনব। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।