জাতির সংবাদ ডটকম: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে যথাসময়ে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজও (বৃহস্পতিবার) বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ প্লাটুন সদস্য সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আজও নারী পুলিশ ও এপিবিএনসহ ৫ শতাধিক পুলিশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মোতায়েন রয়েছে।
সকাল ১০টা থেকে দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ অংশের মনোনীত উপ-কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন। নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা।
এর আগে গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ওইদিন সকাল ১০টায় শুরুর কথা থাকলেও ভোটগ্রহণ শুরু হয় দুপুর ১টার দিকে। এদিন আওয়ামী লীগপন্থি আইজীবীদের গঠন করা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
এরপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে উত্তেজনা তৈরি হয়। দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হট্টগোল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। বেলা ১২টার দিকে ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পিটিয়ে বের করে দেয় পুলিশ।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরের শিকার হন সময় সংবাদের ভিডিও সাংবাদিক সোলায়মান স্বপন, এটিএন নিউজের রিপোর্টারসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র শহীদ শফিউর রহমান অডিটোরিয়ামে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তাদের অডিটোরিয়াম থেকে বের করে দেয়ার জন্য সেখানে প্রবেশ করেন পুলিশ সদস্যরা। তারা সেখানে ঢুকেই বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন সাংবাদিকেরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারে, জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।
গত সোমবার (১৪ মার্চ) রাতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মুনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করলে আওয়ামী লীগপন্থিদের পক্ষ থেকে মো. মনিরুজ্জামানকে এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সমিতির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়।
বুধবার সকালে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা তাদের গঠন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে ভোটগ্রহণ শুরুর চেষ্টা করলে বাধা দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২ দিনব্যাপী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ৭টা থেকেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে ছিল কয়েকশ পুলিশের উপস্থিতি। এ ছাড়া সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। যা আজ আরও বাড়ানো হয়েছে।