উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যার এক মাসের সম্মানীভাতা বিশ কোটি টাকা প্রদান 

শুক্রবার, আগস্ট ৩০, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।

বৃহস্পতিবার ২৯ আগষ্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থার (বাইসস)সরকারী আর্থিক সুবিধা অর্থাৎ সরকার প্রদত্ত সম্মানীভাতার অর্থ(২০ (বিশ) কোটি টাকা প্রায়। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদানের ঘোষনা সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জান।

 

বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থার মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম বলেন -আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, “বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস)” দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের জাতীয় সংগঠন। তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের অর্থাৎ দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য/সদস্যাদের একটি জাতীয় সংগঠনের নেতৃত্বে সংগঠিত করে ইউ. পি. সদস্যদের ভূমিকা ও অংশগ্রহন নিশ্চিতের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে সুশিক্ষিত ও শক্তিশালী অর্থনীতিতে সুপ্রতিষ্ঠিত করে একটি আত্বনির্ভরশীল ও মর্যাদা সম্পন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

 

তিনি বলেন,সংগঠনের প্রতিটি সদস্যের জীবন দর্শণ হলো গ্রামীণ জন-সাধারণের সেবা ও বল্যাণ সাধন। স্বল্প সময়ের মধ্যে সবার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও বাসস্থান। এই শ্লোগানকে বাস্তব রূপ দানের লক্ষ্যে সংগঠন ও ভার সদস্যবৃন্দ সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। দেশের বিভিন্ন পেশাজীবি ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের অন্যতম প্রধান সমস্যা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত যুব সমাজকে মুক্ত করতে যুগপোযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ সর্বোপরি দেশকে আত্মনির্ভর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই সংগঠন একটি আর্থ-সামাজিক বিপ্লবের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

তিনি আরো বলেন,আমরা প্রথমেই “বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস)” এর পক্ষ থেকে ছাত্র/জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা সহ আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

 

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,আপনার প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে অবহিত করছি যে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত অর্ন্তবর্তীকালীণ সরকারের প্রতি আকুন্ঠ সমর্থন জানিয়ে দেশ প্রেমিক সকল ছাত্র জনতার “রাষ্ট্র সংস্কার” চাহিদা বাস্তবায়নে “বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস)” এর প্রস্তাবনা সমূহ আপনার সদয় আর্থার্তে পেশকরছি।-প্রথমেই আমরা দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য অর্থাৎ ৪,৫৫৪ টি ইউনিয়ন পরিষদের ৫৪,৬৪৮ জন সদস্য/সদস্যা একযোগে সদা প্রতিষ্ঠিত অর্ধবর্তীকালীগ সরকারের প্রতি আকুন্ঠ সমর্থন ঘোষনা করছি। পাশাপাশি সরকার কর্তৃক গৃহীত স্থানীয় পর্যায়ের সকল প্রকার নাগরিক সেবা সমূহ আইনানুগভাবে নিজ-নিজ দায়িত্বে যথাযথভাবে কার্যকর ও বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ দায়বন্ধ রয়েছি। আমরা দেশে বর্তমানে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত বন্যায় ক্ষতিগ্রন্থ সকলের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি বন্যাদুর্গতদের সহায়তার জন্য সকল ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য/সদস্যাগণ আমাদের ১ (এক) মাসের সরকারী আর্থিক সুবিধা অর্থাৎ সরকার প্রদত্ত সম্মানীভাতার অর্থ(২০ (বিশ) কোটি টাকা প্রায়। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদানের ঘোষনা করছি।

 

ফুরকান উদ্দিন বলেন,সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যগণ ইতিমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বিক সহায়তার লক্ষ্যে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করে সংগঠনের নেতৃত্বে বানভাসী মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছি। একই সাথে সদস্যগণ নিজ-নিজ এলাকার স্থানীয়দের সাথে নিয়ে দূর্গতদের সহায়তায় সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সর্বাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন,নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দ্যেশে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটির শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষন, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন আশাকরি ।

 

আমাদের নিম্নোক্ত সুপারিশ সমূহ।

 

(১) সংবিধানের নির্দেশনা মোতাবেক জন আকাঙ্খা পূরনের জন্য অবিলম্বে শক্তিশালী, গতিশীল ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

 

(২) বিভাগীয় পর্যায়সহ সকল প্রশাসনিক স্তরে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা পূর্নাঙ্গভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

 

(৩) সকল স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সে মর্যাদা নির্ধারন পূর্বক তাদেরকে নির্ধারিত বেতন কাঠামোর আওতায় এনে জনগনের নিকট জবাবদিহিতার ব্যবস্থা রাখা। এ প্রেক্ষিতে আমাদের প্রস্তাব- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে সিনিয়র সহকারী সচিব ও সদস্যদের সহকারী সচিব পদ-মর্যাদা নির্ধারন পূর্বক নিয়মিতভাবে বেতন-ভাতা সহ সকল আনুসাঙ্গিক সুবিধা সমূহ নিশ্চিত করা।

 

(৪) যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদ একটি প্রশাসনিক একাংশ, আর তাই অবিলম্বে দেশের সকল ইউনিয়নে- ইউনিয়ন পরিষদ ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা।

 

৫) ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ন্যাস্ত করা।

 

(৬) ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদকে পূর্নাঙ্গ প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে কার্যকর করা।

 

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থার মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম,বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকফুরকান উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।